ভেকু গাড়ি ভাড়া দিয়ে লেবার সর্দার আকরামকে হয়রানির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভাড়ায় চালিত ভেকু গাড়ি (এক্সেভেটর বা মাটি কাটার যন্ত্র) চুক্তিভিত্তিক প্রদান করে এক লেবার সর্দারকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। গাড়ি ফেরৎ দেওয়ারও দীর্ঘদিন পর গাড়ি চুরির অভিযোগে হুমকী ধামকী দেওয়া হচ্ছে লেবার সর্দার আকরাম হোসেনকে। ফলে আতঙ্কে দিন কাটছে তার।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার আটুলিয়া গ্রামের জব্বার গাইনের পুত্র আকরাম হোসেন লেবার সর্দার হিসাবে কর্মরত। বিভিন্ন ঠিকাদারের কাছ থেকে কাজ নিয়ে শ্রমকিদের নিয়ে তা মজুরি ভিত্তিক সম্পাদন করেন তিনি। এমতাবস্থায় গত মে মাসে মেসার্স ইউনুস এন্ড ব্রাদার্স নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার সাজেদুর রহমান অপুর কাছ থেকে যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ডুমুরখালি কেয়াতলা খাল খননের দায়িত্ব নেন তিনি। খাল খননের জন্য মাটি কাটার ৫ টি এক্সেভেটর ভেকু মেশিন দিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। ৫ টি গাড়ির মধ্যে মেহেরপুরের মোঃ বিদ্যুৎ হোসেনের একটি ছিল। যে গাড়িটি ২৪০ ঘন্টায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ১৮ মে ভাড়া নেন লেবার সর্দার মোঃ আকরাম হোসেন। গাড়ি পরিচালনার জন্য গাড়ির মালিক প্রথমে জুয়েল ও পরে নাছির নামে দুজন চালক গাড়ির সাথে প্রেরণ করেন। কাজ শেষে গত ১৫ জুন গাড়ি বাবদ গাড়ি মালিককে সমুদয় টাকা ও হিসাব নিকাশ বুঝিয়ে দিয়ে আলোচনা সাপেক্ষে গাড়ির সর্বশেষ চালক নাছিরের কাছে গাড়ি বুঝ করে দেন ও কর্মস্থল থেকে গাড়ি নিয়ে যেতে বলেন। কাজ শেষ হওয়ায় উল্লেখিত ৫ টি গাড়ির ড্রাইভাররা গাড়িগুলোর ব্যাটারী খুলে ঠিকাদার অপুর ম্যানেজার তরিকুলের নেতৃত্বে স্থানীয় বিল্লাল গাজীর বাড়িতে তার জিম্মায় রেখে দেন এবং গাড়িগুলো দেখভালের দায়িত্ব দেন। পরে সুবিধামত সময়ে ৪ টি গাড়ি কাজের সাইট থেকে চলে গেলেও মোঃ বিদ্যুৎ হোসেনের গাড়িটি ও চালক নাছির সেখানে থেকে যায়। ১ মাস পরে গাড়ীর ড্রাইভার নাছির গাড়ি ফেলে রেখে বাড়িতে চলে যান। পরে ঠিকাদারের ম্যানেজার ২ জন লোক নিয়ে এসে বিল্লাল গাজীর বাড়ি থেকে গাড়ির ব্যাটারী নিয়ে গাড়িটা নিয়ে চলে যান। এখন গাড়ির মালিক ফোন করে সে গাড়ি নিয়ে যায় নি বলে গাড়িটি ফেরৎ দেওয়ার জন্য লেবার সর্দার আকরামকে চাপ সৃষ্টি করছে।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে গেলে গাড়ির ব্যাটারী হেফাজতে রাখা বিল্লাল গাজী ও তার পুত্রবধু সাগরিকা বেগম বলেন, “ঠিকাদারের ম্যানেজার তরিকুল এসে ব্যাটারী রেখে গিয়েছিল তাই সে পরে দুই জন লোক নিয়ে ব্যাটারী চাইলে আমরা দিয়ে দেই। পরে তারা গাড়ি নিয়ে চলে যায়।
সাইটে কাজ চলাকালীন নৈশ প্রহরী আবুল কালাম জানান, “কাজ শেষ হলে লেবার সর্দার আকরাম এখান থেকে চলে যায়। ১ টি গাড়ি অনেকদিন থেকে যায় পরে ম্যানেজার দুজন লোক এনে গাড়িটি নিয়ে যায়।
জানতে চাইলে গাড়ির সর্বশেষ ড্রাইভার নাছির বলেন, “কাজ শেষ হলে আকরাম ভাই বলার পর আমি মালিকের সাথে (বিদ্যুৎ) কথা বললে মালিক বলে আকরামের কাছে টাকা পাবে সব টাকা না দিলে গাড়ি উঠায় নিবে না। এভাবে ১ মাস হয়ে গেলে আমি কোন কাজ না থাকায় ওখান থেকে চলে আসি। আমি বিল্লাল গাজীর কাছে ম্যানেজারকে নিয়ে ব্যাটারী রেখে আসি তবে আমি আর ব্যাটারী আনতে যাই নি। ”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লেবার সর্দার মোঃ আকরাম হোসেন জানান, “আমি গত ১৮ তারিখে বিদ্যুৎ হোসেনের কাছ থেকে গাড়িটি ভাড়া নেই। যা কাজ শেষে তাকে টাকা পরিশোধ করে গাড়িটি নিয়ে যেতে বলি। এ গাড়ির জন্য সে কোন টাকা আমার কাছে পাবে না। তার আরেকটি গাড়ি আমি আগে ভাড়া নেই যে গাড়ি এখানে কাজ শেষ হলেও আমার অন্য সাইটে চলছিল। ঐ গাড়ির জন্য আমার কাছে ৮৪ হাজার টাকা পাবে তবে আমি তাকে ২ লক্ষ টাকার চেক দিয়ে রেখেছি। এখান থেকে আমি গাড়ি ছেড়ে দিয়ে তাকে বলে ড্রাইভারকে বুঝ করে দেই তারা গাড়ি নিয়ে গেছে বা কে নিয়ে গেছে সেটি আমি জানি না। এখন বিৎ্যুৎ ফোন করে আমাকে গাড়ি বের করে দেওয়ার জন্য চাপপ্রয়োগ করছে। বিভিন্ন লোকদের দিয়ে ফোন করিয়ে হমিকী দিচ্ছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ভেকু গাড়ির মালিক মোঃ বিদ্যুত হোসেন মোবাইল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নি।

Check Also

আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি 

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।