দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কৃত দুই শতাধিক নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিএনপি। ইতোমধ্যে তারা ভুল স্বীকার করে কেন্দ্রীয় দপ্তরে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেছেন।
বিএনপি থেকে বহিষ্কৃতদের মধ্যে অধিকাংশই সিটি করপেরেশনসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নির্দেশ অমান্য করে অংশ নিয়েছিলেন।
দায়িত্বশীল নেতারা জানান, সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু হয়েছে। আবার জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপিকে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্রও থেমে নেই। এমন পরিস্থিতিতে বৃহত্তর স্বার্থে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের চিহ্নিত করে তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য সিনিয়র নেতারা হাইকমান্ডকে পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ প্রত্যাহার করা না হলে এসব নেতা সক্রিয় হতে পারছেন না। ব
হিষ্কৃত অনেক নেতা আছেন, যারা স্থানীয়ভাবে ব্যাপক জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী, তাদের দলে ফিরিয়ে আনা হলে আন্দোলন আরও গতিশীল হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য যুগান্তরকে জানান, ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে বহিষ্কৃত অনেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করেছেন। তাদের দলে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্যরাও একমত। যা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে। আশা করছি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার শুরু হবে।
এর আগে ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগেও বহিষ্কৃত শতাধিক নেতাকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছিল বিএনপি। সে সময় ১০ বছরে ইউনিয়ন থেকে শুরু করে জেলা-মহানগরের যেসব নেতাকে বহিষ্কার করা হয়, তাদের একটি খসড়া তালিকাও তৈরি করা হয়। সে তালিকায় স্থান পেয়েছিল প্রায় চারশ নেতার নাম। প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই শেষে প্রায় দুইশ নেতার নাম লল্ডনে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছেও পাঠানো হয়। এর মধ্যে বিভিন্ন সময় বেশ কয়েকজনকে দলে ফিরিয়ে আনা হয়।
নেতারা জানান, বিএনপির চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রথম ধাপে টানা সমাবেশ ও রোডমার্চ কর্মসূচি চলবে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত। দাবি আদায়ে কর্মসূচি সফলে মহানগরকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত। কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জসহ গাজীপুর, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে অংশ নেওয়া শতাধিক নেতাকে বহিষ্কার করা হয়। এদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি নেতা স্থানীয় পর্যায়ে অনেক জনপ্রিয়। তারা দীর্ঘদিন ধরে বিএনপিতে ছিলেন।
আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা ছিল তাদের। মামলায়ও জর্জরিত। এসব নেতাকে দলে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে স্থানীয় নেতারাও কেন্দ্রকে চাপ দিচ্ছেন। কারণ এবার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আমরা মনে করি যারা পরীক্ষিত, আবেগের বশবর্তী হয়ে কোনো ভুল করেছে, তারা যদি এখন সংশোধিত হয়ে আসে এতে করে দলের শক্তি ভারসাম্যের সৃষ্টি হয়। এজন্য তাদের আগ্রহের ভিত্তিতে দলেরও অগ্রসর হওয়া উচিত।