ভোটাধিকার, সন্ত্রাস-দখলদারিমুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাস, সবর্জনীন শিক্ষা ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় বিরোধী ছাত্র সংগঠনের ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্রঐক্য’ নামে নতুন জোটের আত্মপ্রকাশ হয়েছে। আপাতত ১৫ ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বে এ জোট গঠন হলেও শিগগিরই আরও বেশ কয়েকটি ছাত্র সংগঠন এতে যোগ দেবে।
মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল। সব ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
শুক্রবার সকালে সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয় মিলনায়তনে ছাত্র সংগঠনগুলো এক প্রতিনিধিসভায় এ নতুন ছাত্র জোটের নাম ঘোষণা করেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।
তিনি বলেন, ভোটাধিকার, সন্ত্রাস-দখলদারিমুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাস, সর্বজনীন শিক্ষা ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ৯ দফার ভিত্তিতে বৃহত্তর ছাত্র আন্দোলন গড়ে তুলতে ক্রিয়াশীল গণতান্ত্রিক ছাত্র সংগঠন সম্মিলিতভাবে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্রঐক্যের নাম আমি ঘোষণা করছি। দেশের ১৮ কোটি মানুষ যারা অধিকার বঞ্চিত, তাদের একটি ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম। ভোটাধিকার বঞ্চিত সব মানুষ এই ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যে অংশগ্রহণ করে একটি স্বনির্ভর, সমৃদ্ধশালী, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে উঠবে সেই বাংলাদেশের প্রত্যাশায় আগামী দিনের রাজপথের সংগ্রামে সবাইকে অংশ নেওয়ার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি।
ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্রঐক্যের জোটে ১৫ সংগঠন হলো— জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ছাত্রলীগ (জেএসডি), গণতান্ত্রিক ছাত্রদল (এলডিপি), নাগরিক ছাত্রঐক্য, জাগপা ছাত্রলীগ, ছাত্র ফোরাম (গণফোরাম মন্টু), ভাসানী ছাত্র পরিষদ, জাতীয় ছাত্র সমাজ (কাজী জাফর), জাতীয় ছাত্র সমাজ (বিজেপি-পার্থ), জাগপা ছাত্রলীগ (খন্দকার লুৎফর), ছাত্র জমিয়ত বাংলোদেশ, বিপ্লবী ছাত্র সংহতি এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।
শিক্ষার মান উন্নয়ন, মাতৃভাষায় শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে জাতীয় অনুবাদ সংস্থা গঠন, মেধা ও যোগ্যতার শিক্ষাগ্রহণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, সব জাতিসত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতি, শিক্ষাঙ্গনগুলোকে সন্ত্রাস ও দখলদারিমুক্ত করা, ছাত্র সংসদ নির্বাচন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সব ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান প্রভৃতি দাবির পাশাপাশি সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ও রাষ্ট্রে সংস্কারে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলো ৩১ দফা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সাইবার সিকিউরিটি আইনসহ নিবর্তনমূলক সকল কালাকানুন বাতিলের কথাও ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্রঐক্যের ঘোষিত ৯ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে।
প্রতিনিধিসভায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খানের সভাপতিত্বে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল যুগান্তরকে বলেন, আপাতত ১৫ ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বে এ জোট গঠন করা হয়েছে। শিগগিরই আরও বেশ কয়েকটি ছাত্র সংগঠন এতে যোগ দেবেন। অতীতে দেশরক্ষা, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও মানুষের অধিকার আদায়ে ছাত্র সংগঠনগুলো অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে, প্রতিটি আন্দোলনে সফল হয়েছে। দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় ছাত্র সংগঠনগুলো ঘরে বসে থাকতে পারে না। তাই এবারও ঐক্যবদ্ধভাবে এই অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সবাই একমত। শিগগিরই কর্মসূচি আসবে।