ফিলিস্তিনির উত্তর গাজার সব বেসামরিক বাসিন্দাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উপত্যকার দক্ষিণে পালাতে বলেছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আজ শুক্রবার সরাসরি গাজা সিটির (উত্তর গাজা) বাসিন্দাদের উদ্দেশে এ কথা বলেছে। এই আদেশ প্রত্যাহার করে নিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা গাজা সিটির সব বেসামরিক নাগরিককে তাঁদের বাড়িঘর থেকে সরে যেতে বলছে। নিরাপত্তার স্বার্থে তাঁদের উপত্যকার দক্ষিণে চলে যেতে বলছে তারা।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে আগামী দিনগুলোতে গাজা সিটিতে বড় ধরনের অভিযান চালানোর ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা গাজা সিটির বেসামরিক লোকজনের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর চেষ্টা করবে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে আরও বলা হয়, হামাসের সদস্যরা গাজা সিটির ঘরবাড়ির নিচে থাকা টানেলের ভেতরে, বেসামরিক ভবনের ভেতরে লুকিয়ে আছেন।
যখন পরবর্তী ঘোষণা দেওয়া হবে, তখন বেসামরিক লোকজন গাজা সিটিতে ফিরতে পারবে বলে বিবৃতিতে জানায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের এই আদেশের অর্থ হলো, গাজা সিটিসহ আশপাশের সব বাসিন্দাকে তাঁদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে হবে। এই এলাকার মোট জনসংখ্যা প্রায় ১১ লাখ।
জাতিসংঘ বলেছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এই আদেশের মানবিক পরিণতি হবে বিধ্বংসী। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর আদেশ অনুযায়ী এত মানুষের স্থানান্তর অসম্ভব মনে করে জাতিসংঘ।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এই স্থানান্তর আদেশ জাতিসংঘ কর্মীসহ আশ্রয়শিবিরে থাকা ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্যও প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
জাতিসংঘের এই প্রতিক্রিয়াকে ‘লজ্জাজনক’ হিসেবে অভিহিত করেছে ইসরায়েল।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস গত শনিবার ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায়। হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩০০।
জবাবে গত শনিবারই পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৩৭। আহত হয়েছেন ৬ হাজার ৬১২ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতকাল এ তথ্য জানায়। মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৫০০ শিশু ও ২৭৬ জন নারী রয়েছে।
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৩ লাখ ৩৮ হাজার ফিলিস্তিনি।