ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে র্যাব পরিচয়ে ৪৮ লাখ টাকা ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাতজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেট কার, র্যাব লেখা জ্যাকেট, হাতকড়া, খেলনা পিস্তল, ওয়্যারলেস সেট, মোবাইল ফোন সেট, স্বর্ণালঙ্কার এবং ২৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রোববার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশিদ জানান, ঢাকা মহানগর ও পটুয়াখালীর কুয়াকাটা এলাকায় শনিবার অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার সাতজন হলেন- সবুজ মিয়া শ্যামল, সাহারুল ইসলাম সাগর, আবু ইউসুফ, দিদার ওরফে দিদার মুন্সী, ফেরদৌস ওয়াহীদ, আলামিন দুয়ারী ওলফে দিপু ও দাউদ হোসেন মোল্যা।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা হারুন জানান, গত ১০ অক্টোবর বিকেল ৪ টার দিকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে র্যাব পরিচয়ে ওই ডাকাতি হয়।
তিনি জানান, সেদিন উত্তরার আল আরাফা ব্যাংকে টাকা তুলতে গিয়েছিলেন ‘মাদার টেক্সটাইল’ নামের একটি কোম্পানির হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা অনিমেষ চন্দ্র সাহা এবং তার এক সহকর্মী শাহজাহান মিয়া। তাদের সঙ্গে কোম্পানির গাড়ি ছিল।
টাকা তোলার পর ব্যাংকে বসেই কোম্পানির একজন অংশীদার জাফর ইকবালের নির্দেশ অনুযায়ী তার এক পরিচিতি ব্যক্তি রাজনকে ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা বুঝিয়ে দেন অনিমেষ। বাকি ৪৮ লাখ টাকা নিয়ে অফিসের গাড়িতে করেই বনানীর বাসায় ফিরছিলেন তিনি।
কাওলা থেকে টোল দিয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠার পর বিকাল ৪টার দিকে মেরুন রঙের একটি প্রাইভেট কার অনিমেষদের গাড়ির পাশ কাটিয়ে সামনে এসে দাঁড়ায়।
পুলিশ কর্মকর্তা হারুন বলেন, মেরুন রঙের ওই গাড়ি থেকে র্যাব লেখা জ্যাকেট পরা ৫ থেকে ৬ জন বেরিয়ে আসেন। অনিমেষ ও শাহজাহানের কাছে ‘অবৈধ অস্ত্র আছে’ অভিযোগ তুলে তাদের চালকসহ তিনজনকে মেরুন গাড়িতে তুলে নিয়ে হাতকড়া পরানো হয় এবং চোখও বেঁধে ফেলা হয়।
অনিমেষদের বর্ণনা অনুযায়ী, গাড়িটি ২৫ মিনিট বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে পরে ৩০০ ফুট রাস্তার বোয়ালিয়া ব্রিজের উপরে তিনজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই সময় অনিমেষের কাছে থাকা ৪৮ লাখ টাকা, মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় ডাকাতরা।
এ ঘটনার পর অনিমেষ রাজধানীর খিলক্ষেত থানায় মামলা করেন। মামলার পর তদন্তে নামে পুলিশ, অবশেষে শনিবার গ্রেফতার করা হয় সাতজনকে।
গ্রেফতার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দেশের ১৫ জেলায় মামলা রয়েছে জানিয়ে হারুন বলেন, গ্রেফতার ব্যক্তিরা এর আগেও ডাকাতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন, কিন্তু জামিনে বেরিয়ে আবার ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়েছেন।