রাজধানীতে শনিবার বিএনপির মহাসমাবেশ। এটি সামনে রেখে ঢাকা মহানগরসহ বিভিন্ন জেলায় পুলিশ ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের নেতারা। এছাড়া অনেক নেতাকর্মীর বাড়ি বাড়ি পুলিশি অভিযানের অভিযোগও করেছেন স্থানীয় নেতারা। এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজধানীর প্রবেশমুখ আমিনবাজার ও সাভার হাইওয়ে থানার সামনে চেকপোস্ট বসিয়ে যাত্রীবাহী বাস তল্লাশি শুরু করেছে ঢাকা জেলা পুলিশ ও র্যাব।
বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ২৪ ঘণ্টায় গ্রেফতার করা হয়েছে ৩৩০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে। মিথ্যা মামলা হয়েছে ১৬টি। গত তিন দিনে গ্রেফতার করা হয়েছে প্রায় ১২০০ নেতাকর্মীকে। রাতে টার্গেট করে নেতাকর্মীদের বাসায় গিয়ে গ্রেফতার করছে, তল্লাশি করার নামে পরিবারের সদস্যদের হয়রানি করছে।
রিজভী বলেন, ডাকসুর সাবেক জিএস ও বিএনপির যুগ্মমহাসচিব খায়রুল কবির খোকনকে বুধবার সিপাহীবাগে তার ভাইয়ের বাসা থেকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। কুষ্টিয়া জেলা কৃষক দলের সদস্য মেহেদী হাসান সাকবরকে গভীর রাতে গ্রেফতার করার পর পুলিশি নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়। কুষ্টিয়া জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব নুরুল ইসলাম, সদস্য জামাল মন্ডল ও কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সদস্য তাজুল ইসলামকেও বুধবার গভীর রাতে গ্রেফতার করে পুলিশ।
সারা দেশে গ্রেফতার নেতাকর্মীদের তথ্য তুলে ধরেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আকতার হোসেন, সদস্য আবুল হোসেন আব্দুল, খিলক্ষেত থানা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী মো. ফজলুল হক, শাহআলী থানা বিএনপির সদস্য আব্দুল মালেক মাস্টার, বিএনপি কর্মী কামাল, যুবদল কর্মী রাব্বি হোসেন, মিরপুর থানা বিএনপির সদস্য আকরাম হোসেন, শাহ আলী থানা বিএনপি নেতা আজমল হোসেন সম্রাট, কল্যাণপুর পোড়া বস্তি ইউনিট বিএনপি কর্মী জসিম (প্রতিবন্ধী), দারুসসালাম থানার ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের মনজিল হোসেন, মো. আলী, ১০নং ওয়ার্ড বিএনপি কর্মী মো. জাহাঙ্গীর, ১২নং ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি মো. ইসহাক, ৭নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মো. মিজান, মিরপুর থানা বিএনপির সদস্য মোল্লা মো. মহিউদ্দীন, ১১নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা কালাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী গিয়াস উদ্দীন, মহিন, মোবারক, মো. সোহাগ হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য আবুল হোসেন আব্দুল, ১৩নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রহমান রনি, মিরপুর থানা মৎস্যজীবী দলের সদস্য নবীর হোসেন, মহিউদ্দীন দয়াল, মিরপুর থানা মৎস্যজীবী দলের সদস্য গিয়াস উদ্দিন, আবুল কালামকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আওতাধীন বংশাল থানার ৩৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য আরিফ হাসান, ওয়ারী থানাধীন ৩৯নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা জনিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির দপ্তর সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার রাত ৮টা পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয় অন্তত ৭০ নেতাকর্মীকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মোট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, হয়রানির মনোভাব নিয়ে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করছে না। যাদের নামে মামলা, ওয়ারেন্ট এবং সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে, শুধু তাদেরই গ্রেফতার করা হচ্ছে।