জেলহত্যা দিবস আজ। ১৯৭৫ সালের এই দিনে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী ও ৪ জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এএইচএম কামারুজ্জামান এবং ক্যাপ্টেন মনসুর আলীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করবে। বঙ্গবন্ধুর আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা ঘোষণার পর পরই পাকিস্তানের সামরিক জান্তা ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে জাতির জনককে তার ধানম-ির ঐতিহাসিক বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময় সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের সমধিক পরিচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাজউদ্দিন আহমেদ একটি স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় কোটি কোটি বাঙালির স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বঙ্গবন্ধুর অপর ঘনিষ্ঠ সহযোগী এএইচএম কামারুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন মনসুর আলী আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে নীতি ও কৌশল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় ৪ নেতাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যার পরদিন তৎকালীন উপ-কারা মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) কাজী আবদুল আউয়াল লালবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই ঘটনায় মামলা দায়েরের ২৩ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ১৯৯৮ সালের ১৫ই অক্টোবর অভিযোগপত্র দেয়া হয়। ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ২০০৪ সালের ২০শে অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. মতিউর রহমান রায় ঘোষণা করেন।
বিচারিক আদালত রায়ে রিসালদার মোসলেম উদ্দিন (পলাতক), দফাদার মারফত আলী শাহ (পলাতক) ও এল ডি (দফাদার) আবুল হাসেম মৃধাকে (পলাতক) মৃত্যুদ- দেয়। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত ৪ আসামী সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, বজলুল হুদা ও একেএম মহিউদ্দিন আহমেদসহ ১২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেয়া হয়। সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপি নেতা কেএম ওবায়দুর রহমান, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, নুরুল ইসলাম মঞ্জুর ও তাহেরউদ্দিন ঠাকুরকে খালাস দেয়া হয়।