ভারতের নয়াদিল্লিতে আজ যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে মন্ত্রী পর্যায়ের টু প্লাস টু বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন ওই বৈঠকে যোগ দেবেন। তবে ব্লিঙ্কেনের আসার আগেই সেখানে পৌঁছেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
পিটার হাসের উপস্থিতিতে আলোচনায় বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইস্যু প্রধান্য পাবে বলে মনে করছে দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
যুক্তরাষ্ট্রের মন্ত্রী লয়েড অস্টিন এবং ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও মন্ত্রী রাজনাথ সিং বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন।
একটি সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ২০২৪ সালের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বেশ উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব লক্ষ করা যাচ্ছে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও একটি গণতান্ত্রিক সরকার দেখতে চায় ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র।
সূত্রের বরাতে পত্রিকাটি বলছে, যুক্তরাষ্ট্র বারবার বলছে— বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায় তারা; কিন্তু চীনা হস্তক্ষেপে যা বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে দেশটির আশঙ্কা।
দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সাংবাদিক ইয়াসি শেলির প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের স্থানীয় জনগণের চীনপন্থি একটা ঝোঁক আছে। প্রতিবেশী দেশে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ভারতের সংকট বাড়িয়ে তুলতে পারে। চীনপন্থি মোহাম্মদ মুইজ্জু মালদ্বীপের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর, ভারত দ্বীপরাষ্ট্রে তার শক্ত ঘাঁটি হারিয়েছে। প্রতিবেশী এলাকায় একই ধরনের পরিস্থিতি ভারতের প্রভাবকে আরও দুর্বল করে দেবে।
ইয়াসি শেলি মনে করেন, বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান আগ্রহ ইন্দো-প্যাসিফিকে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব রুখে দেওয়ার জন্য। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বিনিয়োগ। বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচন, তাই তাৎপর্যপূর্ণ এবং যুক্তরাষ্ট্র একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে, তা বারবার বলে আসছে।
উল্লেখ্য, মানবাধিকার ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ২০২১ সালে বাংলাদেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে রূপপুরে বাংলাদেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য পণ্য বহনকারী রাশিয়ান জাহাজ উরসা মেজরকে মোংলাবন্দরে নোঙর করা থেকে বিরত রাখে। কেননা জাহাজটি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ছিল।
এদিকে গত কয়েক বছরে কক্সবাজারে ১.২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের বাংলাদেশে প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটি তৈরি করেছে চীন। এটি ২০২৩ সালের মার্চ মাসে উদ্বোধন করা হয়। এটি দেশের প্রতিরক্ষা সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণের জন্য বাংলাদেশের ‘ফোর্সড গোল ২০৩০’-এর একটি অংশ হিসাবে একসঙ্গে ছয়টি সাবমেরিন এবং আটটি যুদ্ধজাহাজ ডক করার ক্ষমতাসহ নির্মিত হয়েছে।
বাংলাদেশ নিয়ে বিস্তার আলোচনা না হলেও আজকের মিটিংয়ে প্রধান ফোকাস বাংলাদেশ থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।