বাংলাদেশে নির্বাচন আসন্ন। কিন্তু বিরোধী দলের অনেক নেতাকে জেলে পাঠানো হচ্ছে। একটি বড় দলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বহাল আছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইসলামপন্থি দল জামায়াতে ইসলামীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বিষয়ে আগের নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে শীর্ষ আদালত। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক সম্পাদকীয়তে এসব বলা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, সম্প্রতি বিক্ষোভকারীদের ওপর সরকারের দমনপীড়নের জেরে প্রায় ১৩৯ জন সিনিয়র বিরোধী নেতা ও কর্মীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই বিএনপির। অবশ্যই, বিরোধীরা কিছু সহিংস বিক্ষোভ সংগঠিত করেছে। এর লক্ষ্য হচ্ছে ৭ই জানুয়ারি একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা করতে বাধ্য করা। কিন্তু ২০১১ সালে সংবিধানের ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত হওয়ার পর থেকে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের দাবিতে রাস্তায় নামে বিএনপি।
তবে যা উদ্বেগ বাড়ায়, তা হলো- এর আগে বিরোধীদের দখলে থাকা জায়গাগুলোতে শূন্যতা। মূলধারার বিরোধী দলগুলোকে প্রান্তিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার অর্থ হবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে উগ্রপন্থিদের পথ করে দেয়া। এটা বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগ উভয়ের জন্যই খারাপ। আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ে জামায়াত ও বিএনপি নেতাকর্মীদের যোগ দেয়ার খবর পাওয়া গেছে। এই অস্থির দলত্যাগীরা ভেতর থেকে আওয়ামী নেতৃত্বের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। তারপর আছে মার্কিন ফ্যাক্টর। ওয়াশিংটন স্পষ্টতই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কর্তৃত্ববাদের অভিযোগ নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং চীনের সঙ্গে তার বৃহত্তর কৌশলগত দ্বন্দ্বের অংশ হিসেবে দেখছে বাংলাদেশকে। এর সঙ্গে আছে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমস্যা। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে, যা তিন মাসের আমদানির জন্য নামমাত্র যথেষ্ট। সেপ্টেম্বরে মুদ্রাস্ফীতি শতকরা ৯.৬ ভাগ ছুঁয়েছে। তাই শেখ হাসিনার ওপর বহুবিধ চাপ তৈরি হচ্ছে। বিরোধী দলের যে অবস্থান থাকা উচিত, তাদেরকে সেই স্থান না দিলে, উগ্রপন্থিদের যে অবস্থান বর্তমানে নেই- তারা সেই অবস্থান তৈরি করে নেবে। ভারতের জন্য এটা ভয়ঙ্কর খবর। একটি উগ্রবাদী বাংলাদেশি এস্টাবলিশমেন্ট পাকিস্তানকে রাজনৈতিক খেলায় ফিরিয়ে আনতে পারে। নিজের এবং শেখ হাসিনার স্বার্থেই তাকে নয়া দিল্লির বলা উচিত ‘ট্র্যাক’ পরিবর্তন করতে।