বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, সরকার চোরাগোপ্তা হামলা ও হত্যার দায় কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না। সচেতন দেশবাসী মনে করেন, সরকারের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদদে বিরোধী দলের চলমান আন্দোলনকে নস্যাৎ কারার জন্যই পরিকল্পিতভাবে এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। কিন্তু এসব করে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না।
শনিবার রাতে দেশে গুপ্ত হত্যা, গুম-খুন বৃদ্ধি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি।
মুজিবুর রহমান বলেন, সরকার এসব চোরাগোপ্তা হামলা ও হত্যার দায় কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না। সচেতন দেশবাসী মনে করেন সরকারের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদদে বিরোধী দলের চলমান আন্দোলনকে নস্যাৎ কারার জন্যই পরিকল্পিতভাবে এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, এভাবে চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে, হত্যা করে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের মাধ্যমে বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটানো হবে, ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে গুপ্তহত্যা, গুম-খুন ও চোরাগোপ্তা হামলার ঘটনা ব্যপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। হঠাৎ করে সাদা মাইক্রোবাসে এসে টার্গেটকৃত ব্যক্তির উপর চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে দুর্বৃত্তরা নিরাপদে পলায়ন করছে। টার্গেট করা হচ্ছে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা সকলের কাছেই প্রশ্নবিদ্ধ।
আমরা এসব গুপ্তহত্যা ও হামলায় হতাহতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর বলেন, পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী গত এক মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে ২০টি চোরাগোপ্তা হামলা ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে। রাজশাহীতে দুজন ডাক্তারকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। বগুড়া ও নওগাঁয় দুজন বিএনপি নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ ও বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের উপর চোরাগোপ্তা হামলার ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নেতাকর্মীদের বাসাবাড়ি, দোকান-পাট, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও প্রতিনিয়ত বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের বাড়িতে হানা দিচ্ছে এবং গ্রেপ্তার করছে। এমনকি মসজিদে জানাযা নামাজ ও বিয়ের অনুষ্ঠানেও হানা দেয়া হচ্ছে। গতকাল বিকাল থেকে আজ বিকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় গাজীপুর মহানগরীর মেট্রো মধ্য থানার সহকারী সেক্রেটারি এনামুল হক শরিফ, মেট্রো উত্তর থানা সেক্রেটারি কাজী মাহফুজ উল্লাহ ও শিল্পাঞ্চল থানার তারবিয়াত সেক্রেটারি মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ সারাদেশে জামায়াতের ২০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অবিলম্বে দেশব্যাপী চোরাগোপ্তা হামলা ও হত্যা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান মুজিবুর রহমান।