সাতক্ষীরায় চলতি মৌসুমে রোপা আমন চালের উৎপাদন বেড়েছে। গত মৌসুমের তুলনায় এবার জেলায় প্রায় ১১ হাজার টন চাল উৎপাদন বেশি হয়েছে। যদিও কিছু এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছিল। তারপরও উৎপাদন ভালো হয়েছে বলে মনে করেন কৃষি কর্মকর্তারা।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ মৌসুমে জেলার সাতটি উপজেলায় রোপা আমন চাল উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ৫২ হাজার ৫৯০ টন। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ৪৯ হাজার ৭৮৯ টন, কলারোয়ায় ৩৪ হাজার ৩৭৬, তালায় ৩০ হাজার ১৩৭, দেবহাটায় ১৫ হাজার ৬৩৮, কালীগঞ্জে ৪৮ হাজার ৪৫৭, আশাশুনিতে ২৬ হাজার ৩৫৬ এবং শ্যামনগর উপজেলায় ৪৮ হাজার ৩৩৭ টন চাল উৎপাদন হয়েছে। তবে গত মৌসুমে জেলায় রোপা আমন উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ৪১ হাজার ৮৫৮ টন। এ হিসাবে চলতি মৌসুমে ১০ হাজার ৭৩২ টন উৎপাদন বেড়েছে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুখরালী গ্রামের কৃষক তুহিন হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে তিনি ১৫ বিঘা জমিতে রোপা আমন চাষ করেন। শুরু থেকে নানা প্রতিকূলতার পরও উৎপাদন ভালো হয়েছে। এবার অনাবৃষ্টির কারণে বীজতলা তৈরিতে বেশ সময় পেরিয়ে যায়। চারা রোপণের পর বৃষ্টিপাত তেমন না হওয়ায় ভূগর্ভে পানি ব্যবহার করা হয় এক থেকে দেড় মাস। এতে খরচও বেড়ে যায়। অন্যান্য মৌসুমে রোপা আমন চাষে বিঘাপ্রতি খরচ হয় ৭-৮ হাজার টাকা। সেখানে চলতি মৌসুমে বিঘাপ্রতি প্রায় ১০ টাকা খরচ হয়েছে। উৎপাদন ভালো হওয়ায় কিছুটা পুষিয়ে গেছে। বিঘাপ্রতি ১২-১৩ মণ চাল পেয়েছেন তিনি।
একই উপজেলার ফিংড়ি গ্রামের কৃষক জালাল উদ্দিন জানান, চলতি মৌসুমে আট বিঘা জমিতে রোপা আমন চাষ করেন তিনি। বীজতলা, সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরি দিয়ে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা খরচ হয়। সেখানে চাল উৎপাদন হয়েছে প্রায় ১০০ মণ। এতে তার উৎপাদন খরচ তুলেও ৫৫-৬০ হাজার লাভ হবে।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘গত মৌসুমের তুলনায় চলতি মৌসুমে রোপা আমন উৎপাদন বেড়েছে। কিছু এলাকায় পোকার আক্রমণ দেখা দিলেও সার্বিক উৎপাদন ভালো হয়েছে।’