ওসি নতুন, তাই ধর্ষণচেষ্টার মামলা নেবেন না!

থানায় নতুন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) যোগদান করেছেন, এমন অবস্থায় ধর্ষণচেষ্টার মামলা নিলে নবাগত ওসির সম্মানহানী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই ধর্ষণচেষ্টার ঘটনার ভুক্তভোগী এক নারীকে কয়েকঘণ্টা বসিয়ে রেখে মামলা না নিয়ে থানা থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানীর কোতয়ালী থানায়। এ বিষয়ে ওই ভুক্তভোগী নারী সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে পৃথক দুইটি অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গত বুধবার (৬ ডিসেম্বর) রাত ৯টায় বাবুবাজার এলাকার একটি ভবনে ডেকে নিয়ে এক নারীকে ৪-৫ জন মিলে মারধর ও ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় ওই নারীর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে এলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে গুরুতর অবস্থায় মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে কোতয়ালী থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী নারী।

অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় ওই নারীকে রাত ৮টা থেকে ১ পর্যন্ত থানায় বসিয়ে রেখে মামলা না নিয়ে বেড় করে দেওয়া হয়। এসময় থানা পুলিশ ভুক্তভোগী নারীকে জানায়, থানায় নতুন ওসি যোগদান করেছেন, যদি ধর্ষণের মামলা নেওয়া হয় তাহলে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে জবাব দিতে হবে। এতে তার (ওসি) তি হওয়ার সম্ভবনা থাকায় মামলা নেওয়া হবে না।

পরদিন রবিবার সন্ধ্যা ৭টায় পুনরায় কোতয়ালী থানায় গিয়ে ওসির সঙ্গে দেখা করে ভুক্তভোগী নারী। ঘটনাস্থল একটি আবাসিক হোটেল হওয়ায় এ সময় ওসি ওই নারীর ওপর ক্ষিপ্ত হন। এছাড়াও অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা ভুক্তভোগী নারীকে জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা অনেক প্রভাবশালী এবং থানা পুলিশের সঙ্গে তাদের আগে থেকেই সুসম্পর্ক রয়েছে। তাই মামলা নেওয়া যাবে না।

অভিযোগের বিষয়ে কোতয়ালী থানার ওসি মাহফুজুর রহমান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমি ৯ ডিসেম্বর থানায় যোগদান করি। এমন কোন ঘটনা কোতয়ালী থানাতে হয়নি। কাউকে বের করে দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। কোনো ঘটনার সত্যতা থাকলে অবশ্যই মামলা হবে।’

ভুক্তভোগী ওই নারী ঢাকা টাইমসকে জানান, অভিযুক্তদের সঙ্গে তার পূর্বপরিচয় ছিল। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে দুইটি মামলা চলমান রয়েছে। সেই মামলা মীমাংসা ও বিয়ের কথা বলে অভিযুক্তরা তাকে ডেকে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন ও ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। থানা পুলিশের সঙ্গে অভিযুক্তদের আগে থেকেই সুসম্পর্ক থাকায় পুলিশ মামলা না নিয়ে কয়েকঘণ্টা বসিয়ে রেখে বের করে দেয়।

ভুক্তভোগী জানান, এ ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ও ডিএমপি সদর দপ্তরে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

 

 

Check Also

আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি 

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।