সোমবার (১১ ডিসেম্বর) গেজেট চ্যালেঞ্জ করে তাজকিন আহমেদের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। ফলে তাজকিন আহমেদের দায়িত্ব পালনে আপাতত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।
তাজকিন আহমেদ সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও পৌর বিএনপির সদস্য সচিব।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল, আইনজীবী তানভীর আহমেদ ও আহমেদ আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ।
স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রশাসনিক অনুমোদন ছাড়া এবং বিধিবহির্ভূতভাবে পৌরসভার ভাগ্যকূল মিষ্টান্ন ভান্ডার সংলগ্ন জমিতে মার্কেট নির্মাণের দরপত্র আহ্বানসহ ১০ দফা অভিযোগ উল্লেখ করে পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদের বিরুদ্ধে গত আগস্টের শেষ সপ্তাহে জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর লিখিত অনাস্থা প্রস্তাব দাখিল করেন ১২ কাউন্সিলর।
গত ৩ সেপ্টেম্বর বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বিষ্ণুপদ পালকে নির্দেশ দেন ডিসি। নির্দেশ মোতাবেক তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বিষ্ণুপদ পাল। এরপর গত ২৫ সেপ্টেম্বর পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদকে ‘অনাস্থা প্রস্তাব’-এর পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় কার্যধারা কেন নেওয়া হবে না— মর্মে এই চিঠি পাওয়ার ১০ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়।
কিন্তু তাজকিন আহমেদ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের চিঠির জবাব নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে না দেওয়ায় কাউন্সিলর ফিরোজ হাসানকে (ভারপ্রাপ্ত মেয়র) অনাস্থা প্রস্তাব সম্পর্কিত সভা ডাকার আহ্বান জানানো হয়।
পরে গত ১৮ অক্টোবর বিকেল ৩টার দিকে সাতক্ষীরা পৌরসভা পরিষদ কক্ষে সভা ডাকেন ভারপ্রাপ্ত মেয়র কাজী ফিরোজ হাসান। সেই সভায় ১২ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১১ জন উপস্থিত ছিলেন। সভায় উপস্থিত ১১ জনই অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। তবে ওই সভায় পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন না।
এরপর গত ২৩ নভেম্বর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর–১ শাখার উপসচিব আব্দুর রহমানের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়রের পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়।
আইনজীবী তানভীর আহমেদ জানান, মোট তিনটি গেজেট ইস্যু করা হয়। প্রথমটিতে মেয়রের পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়। দ্বিতীয়টিতে প্যানেল মেয়র-১ কে প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা দেওয়া হয়। তৃতীয়টিতে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন-২০০৯ এর ৩৩(২) ধারা অনুসারে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব বরাবর চিঠি দেওয়া হয়। এ তিনটি গেজেট তিন মাসের জন্য স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ফলে তাজকিন আহমেদের দায়িত্ব পালনে আপাতত কোনো বাধা নেই।