সাতক্ষীরা সদরে জমে উঠেছে নির্বাচন দুই প্রার্থীতে বিভক্ত আওয়ামী লীগ

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরা সদর আসনে দুই প্রার্থীর পক্ষে বিপক্ষে প্রচার প্রচারণা নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দুই গ্রুপে বিভক্ত। সংখ্যাগরিষ্ট শীর্ষ নেতারা লাঙ্গলের পক্ষে অবস্থান নিলেও একাংশ রয়েছে ঈগল প্রতীকের পক্ষে। জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বর্তমান সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এমপির পক্ষে ভোটের মাঠে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের একাংশের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। অপরদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী লাঙ্গল প্রতীকে আশরাফুজ্জামান আশু পক্ষে ভোটের মাঠে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: নজরুল ইসলাম ও আসাদুজ্জামান বাবুসহ তাদের সমর্থকরা।
আওয়ামী লীগ নেতা মো.নজরুল ইসলাম ও আসাদুজ্জামান বাবুর সমর্থকদের কয়েকজন বলেন, স্বতন্ত্র এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা করতে হবে দলের পক্ষ থেকে সরাসরি এমন কোনো দিকনির্দেশনা নেই। তবে আসনটি দলীয় প্রধান আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় পাটির প্রার্থীর পক্ষে দলীয় প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। ফলে পরোক্ষভাবে হলেও সমর্থন জাতীয় পাটির পক্ষে। তাছাড়া আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বর্তমান সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবিকে এবার দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল আসাদুজ্জামান বাবুকে। তারা আরো বলেন দেশের কোথাও এবার মহাজোট না হলেও ২৬টি আসনে জাতীয় পাটির সাথে আসন সমন্বয় করা হয়েছে। এছাড়া ১৪ দলকে দেওয়া হয়েছে আরো ৬টি আসন। ফলে দলের সমর্থন সমন্বয়কৃত আসনে জাতীয় পাটিসহ ১৪ দলের পক্ষে সেটি স্পষ্ট।

অপরদিকে ঈগল প্রতীকের প্রার্থী মীর মোস্তাক আহমেদ রবির পক্ষে কাজ করছেন এমন কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, নেতাকর্মীরা যাকে খুশি তার পক্ষে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় কাজ করতে পারবেন। তাই যাকে খুশি তার পক্ষে তারা নির্বাচনী কাজ করছেন। তারা আরো বলেন নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় যে কেউ যে কোন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে পারবেন, তাতে কোনো বাঁধা নেই এতে কেউ বহিষ্কার হবে না। তারা আরো বলেন কিছুদিন আগে লেকভিউতে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় কয়েকজন নেতা আওয়ামী লীগকে বিভ্রান্ত করার জন্য উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। যাতে করে সদর আসনে জাতীয় পার্টি শক্তিশালী হবে। ওই বর্ধিত সভায় জেলা আওয়ামী লীগের নেতা আসাদুজ্জামান বাবু তার বক্তব্যে বলেন, জাতীয় পার্টির পক্ষে কাজ করলে দীর্ঘদিনের জঞ্জাল পরিস্কার হবে। তাই সবাই নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালিযৈ লাঙ্গল প্রার্থীকে বিজয়ী করে আনতে হবে। তার এই বক্তব্যের মধ্যদিয়ে সদরে আওয়ামী লীগের পরিবর্তে জাতীয় পাটি শক্তিশালী হবে বলে তারা মনে করেন।

নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক তৃণমূল একাধিক নেতাকর্মী বলেন, একটানা ১৫বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার কারণে ও সাতক্ষীরায় তিনটি আসনে ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগের এমপি থাকায় সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগের শক্তি বাড়ার কথা থাকলেও তা দেশের অন্যান্য স্থানের মতো বাড়েনি। দেশের বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক উন্নয়ন হলেও সাতক্ষীরা জেলায় উন্নয়ন হয়েছে তুলনামূলকভাবে কম। দুর্ণীতি, অনিয়ম, নিয়োগ বানিজ্য এবং দলের নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়নের কারনে স্থানীয় সংসদ সদস্যরা বিতর্কিত হয়ে পড়েন। ফলে সাতক্ষীরায় ওয়ার্কার্স পাটির একজনসহ নৌকার তিন এমপি এবার মনোনয়ন বঞ্চিত হন।

খোজ নিয়ে জানা গেছে সাতক্ষীরা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নাসেরুল হক, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী আকতার হোসেন, মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোৎন্সা আরা, পৌর আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন গণসংগঠনে থাকা তৌহিদুর রহমান ডাবলু, জিয়াউর বিন সেলিম যাদু, কাজী ইকবাল হোসেনসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের একদল নেতাকর্মী কাজ করছেন। অপরদিকে জেলা আওয়ামী লীগ, সাতক্ষীরা সদর থানা আওয়ামী লীগ এবং পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড নেতারা জাতীয় পাটির প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন।

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।