মায়ের বাড়ি মন্দিরে লাঙ্গল প্রতীকের পক্ষে একাট্টা ধর্মীয় নেতারা:
নিজস্ব প্রতিনিধি: সদর এমপি সাহেব বলেছেন ‘উনি যদি নির্বাচিত না হতে পারেন তাহলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যেতে হতে পরে।’ এই কথা বলা কী? তার ঠিক হয়েছে। এই কথা বলার মাধ্যমে তিনি আমাদের ঝূঁকিতে ফেলে দিয়েছেন। একথা বলে এমপি সাহেব আমাদের নির্যাতনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এটি বলার মাধ্যমে এক রকমের হুমকি দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায়। এখান যদি আমাদের এই অবস্থা হয় আমরা যাবো কোথায়। এমপি সাহেবের এই কথার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমাদের দাবী যে সরকার ক্ষমতায় আসুক আমাদের দেশ ছেড়ে চলে যেতে না হয় সেই ব্যবস্থা করবেন।
শুক্রবার বিকালে পুরাতন সাতক্ষীরা মায়ের বাড়ি মন্দিরে আগামী ৭ জানুয়ারী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা সদর আসনের লাঙ্গলের প্রার্থী আশরাফুজ্জামান আশুর সাথে মতবিনিময় সভায় ধর্মীয় নেতারা এসব কথা বলেন। এসময় লাঙ্গল প্রতীকের পক্ষে একাট্টা ভোট দিতে বলেন তারা।
মন্দির প্রাঙ্গনে জনসভায় লাঙ্গল প্রতীক কে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার একাট্টা প্রকাশ করেছে সাতক্ষীরা সকল সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। জেলা মন্দির সমিতির সভাপতি এড সোমনাথ ব্যানার্জীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা সদর আসনের লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী আশরাফুজ্জামান আশু।
প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবু, ।
জেলা মন্দির সমিতি, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযান পরিষদের যৌথ আয়োজনে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সদর উপজেলা শাখার সভাপতি নিত্যানন্দ আমিনের সঞ্চলনায় সভায় বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রশিদ, সাতক্ষীরা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ ঘোষ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার শীল, সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শিবপদ গাইন, সদর উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক বাসুদেব সিংহ, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য শুধাংশু শেখর সরকার প্রমুখ।
সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবু বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী আশরাফুজ্জামান আশু। সাতক্ষীরা সনাতন ধর্মাবলম্বী সকল মানুষ ঐক্যবদ্ধ জননেত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রাথী জয়যুক্ত করতে প্রস্তুত। যারা জননেত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী পক্ষে না থাকে বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছে এরা কখনো আওয়ামী লীগের হতে পারে না। এরা সুবিধাবাদী দালাল এরা নিজেদের প্রয়োজনে দলকে বিক্রি করে দিতে দ্বিধা বোধ করে না। আমি নৌকা প্রতীক পেয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে যদি নির্বাচন থেকে সরে আসতে পারি তাহলে নেতাকর্মীরা কেন পারবে। প্রকৃত নেতাকর্মীরা কখনো দলের সিদ্ধান্ত বাইরে যায় না। ১০ বছর সদরবাসী উন্নয়ন থেকে বঞ্জিত হয়েছি। এমন কোন অন্যায় করিনি মেডিকেলের টেন্ডারবাজি, নিয়োগ বাণিজ্য সরকারি টাকা আত্মাসাৎ থেকে শুরু সকল ধরনের দুর্নীতির আখড়া বানিয়ে ফেলেছিল সদর আসনকে। পিয়ন, নাইট গার্ড, সুইপার থেকে শুরু করে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১০টা বছর নিয়োগ বাণিজ্যর মহাআখড়া গড়ে তুলেছিল। এসকল অপকান্ডের জন্য সদরবাসীকে জিম্মি দশা থেকে মুক্ত করতে শেখ হাসিনা তাকে লাল দেখিয়েছে। সে লাল কার্ড পেয়েও জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটুক্তি করে নেত্রীর সিদ্ধান্ত ভুল বলে মিডিয়া সাক্ষাৎকার দেয় এর মতো খন্দকার মোশতাক আর দ্বিতীয় নেই আওয়ামী লীগে।
আমরা ১০ বছর জিম্মি ছিলাম মুক্তির স্বাদ পাওয়ার সময় এসেছে আপনারা জেগে ওঠুন। ৭ তারিখে জননেত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে এই সদরবাসীকে জিম্মি দশা থেকে মুক্ত করব। আমি জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আপনাদের দ্বারে এসেছি জোটের প্রার্থীকে জয়ী করতে।
একটি সুন্দর সাতক্ষীরা গড়ার প্রত্যায় নিয়ে আপনাদের দ্বারে এসেছি আপনারা লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে সুন্দর সাতক্ষীরা গড়ার সহযোগিতা করুন।
জেলা মন্দির সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার শীল বলেন, আশরাফুজ্জামান আশু ভালো মানুষ। জননেত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত জোট প্রার্থী আশরাফুজ্জামান আশুকে আমরা সনাতন ধর্মাবলম্বী সকল শ্রেণীর মানুষ লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করব।
হিন্দু ধর্মের একাধিক নেতা বলেন, আমরা সনাতন ধর্মাবলম্বী সকলে এখানে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে। আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রার্থী জোটের প্রার্থী আশরাফুজ্জামান আশুর পক্ষে একাট্টা প্রকাশ করছি। কোন বিদ্রোহী প্রার্থীর উৎস্কানিতে আমাদের ভিতর কলহ সৃষ্টি করতে পারবে না। আমরা দুর্নীতিবাজ, নিয়োগ বাণিজ্যকারী, টেন্ডারাবাজকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই না। জননেত্রী শেখ হাসিনা যাকে লাল কার্ড দেখিয়েছেন আমরা সনাতন ধর্মাবলম্বী সকল শ্রেণীর মানুষ এই অনুষ্ঠানের মাধ্যম তাকে লাল কার্ড দেখালাম। আমি সনাতন ধর্মাবলম্বী সকল মানুষের কাছে আহবান করব একটি ভোট যেন কোন দুর্নীতিবাজের পক্ষে না পড়ে। আমরা ৭ জানুয়ারি শেখ হাসিনার প্রার্থী লাঙ্গলকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে একজন টেন্ডারবাজকে সাতক্ষীরা থেকে বিদায়ী করব।
লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী আশরাফুজ্জামান আশু বলেন, আমরা অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে লালন করে বড় হয়েছি। আমি সাতক্ষীরা মন্দিরে বসে কথা দিয়ে গেলাম সনাতন ধর্মাবলম্বী সকল মানুষের কাছে, আমি আপনাদের ভোটে সংসদ নির্বাচন হলে আমার বাড়িতে যেতে ওই টেন্ডারবাজের মতো টিকিট কাটতে হবে। সাতক্ষীরা সকল ধর্মাবলম্বী মিলেমিশে বাস করতে যা যা করা দরকার আমি করব। সংসদে আপনারে অধিকার প্রতিষ্ঠায় কথা বলব আপনারা আমার কাছে আমানত। সাতক্ষীরায় সংখ্যালঘুর ওপর কোন ধরনের আঘাত আসলে আমি সহ্য করব না, দাঁতভাঙ্গা জবাব দিব। উপস্থিত ছিলেন পৌর কাউন্সিলর নুরজাহান বেগম নুরী জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য জনসংখ্যা সম্পাদক ডা: সুব্রত ঘোষ প্রমুখ।
এদিকে ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আয়োজনে সন্ধ্যায় শহরের চালতেতলা বাজারে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম।
৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মো. আজিজুল ইসলামে সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও লাঙ্গলের প্রার্থী মো. আশরাফুজ্জামান আশু, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি অধ্যাপক আবু আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান বাবু, আহম তারেক উদ্দিন, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক লায়লা পারভীন সেঁজুতি, সাতক্ষীরা পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র কাজী ফিরোজ হাসান, ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন কালু, ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ মারুফ হাসান, সাতক্ষীরা পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো.রাশিদুজ্জামান রাশি, জেলা যুবলীগের আহবায়ক মো. মিজানুর রহমান, পৌর আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মো. কামরুজ্জামান, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সভাপতি মাহমুদ আলী সুমন, ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মতিয়ার রহমান । অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান ।