তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের উন্নয়নে রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, রেললাইন বানায়, নদীভাঙন রোধ করে, শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে বই দেয়। আর বিএনপি নির্বাচন বর্জনের নামে দেশের সম্পদ নষ্ট করে দিচ্ছে। বাসে-ট্রেনে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করছে, তারা মানুষ পোড়ায়।
শনিবার দুপুর থেকে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কোদালা ইউনিয়নের গোয়ালপুরা বাজার, কোদালা বাজার, চা-বাগান এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনি পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় চট্টগ্রাম-৭ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি কোদালা চা-বাগানের শ্রমিক, গ্রামের নারীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলেন এবং নৌকা মার্কায় ভোট প্রার্থনা করেন। এরপর রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা ও বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর-খরন্দ্বীপ ইউনিয়নে গণসংযোগ করেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘জামায়াত ইসলামী স্লোগান দেয় ‘আল্লাহর আইন চাই, সৎ লোকের শাসন চাই’। ওরা বলে, ইসলাম প্রতিষ্ঠা করবে। এদিকে আজ ফিলিস্তিনে মুসলমানদেরকে পাখি শিকারের মতো হত্যা করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ২০ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। এরমধ্যে বেশিরভাগ নারী এবং শিশু। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত আজ পর্যন্ত একটি শব্দ ইসরাইলের বিরুদ্ধে উচ্চারণ করেনি। তাদের নেতা তারেক রহমান কথা বলতে নিষেধ করেছে। কারণ একটি বড় রাষ্ট্র নাখোশ হতে পারে। তারা আজকে মোনাফেক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, আর তাদের ওপর আল্লাহ নারাজ হয়ে গেছে। তাই এদেরকে চিনে রাখতে হবে। এরা নানা বিভ্রান্তি ছড়ায়।’
নিজ নির্বাচনি এলাকার মানুষের উদ্দেশে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রতিদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে নামাজের পর মানুষের উপকারের মাধ্যমে আমার দিনের কাজ শুরু হয়। আমি কোনো মানুষের অপকার করি নাই, কারো অপকার করা আমার ধর্ম নয়। আপনারা জানেন রাঙ্গুনিয়ার কোনো পাগল বা ভিক্ষুকও যদি আমার গাড়ির সামনে হাত দেখায়, আমার গাড়ি দাঁড়ায়। আমি গাড়ি থামিয়ে কথা বলি। প্রধানমন্ত্রী আমাকে দেশের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়ে মন্ত্রিসভায় এবং দলের মধ্যেও সিনিয়র পজিশনে বসিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রদত্ত দায়িত্ব সুচারুভাবে পালন করার চেষ্টা করেছি। আপনাদের সন্তান হিসেবে আমি চেষ্টা করেছি আপনাদের মুখ উজ্জ্বল করার। জাতীয় পর্যায়ে আমার অনেক দায়িত্ব। এরপরও একজন চেয়ারম্যান যেভাবে এলাকায় সময় দেন, আমি সেইভাবে সময় দেই।’
তিনি বলেন, কর্ণফুলী নদীসহ রাঙ্গুনিয়ার অন্যান্য নদীর ভাঙন রোধে ইতোমধ্যে ৫০০ কোটি টাকার কাজ হয়েছে, আরও ১০০ কোটি টাকার কাজ হবে। অনেক জেলায়ও এত উন্নয়ন কাজ হয়নি। রাঙ্গুনিয়ার ৮ হাজার ছেলে মেয়ের চাকরি হয়েছে আমার হাত দিয়ে। চাকরির সুপারিশ করার সময় আমি কখনো ভাবিনি, কে কোন দল করে। আমি সব মানুষের এমপি হবার চেষ্টা করেছি।
আগামী ৭ জানুয়ারি আত্মীয়স্বজন সবাইকে সঙ্গে নিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি ঘরানার মানুষও অনেকে আমাকে ভোট দেয়। রাঙ্গুনিয়ায় আগেও এমপি, মন্ত্রী ছিল। কেউ একটি মসজিদ ভবন বানিয়েছে দেখিয়ে দিতে পারবেন না। মসজিদের মধ্যে কিছু টাকা দিয়েছে বা বড়জোর এক-দুই টন চাল টিআর দিয়েছে বলতে পারবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমার পারিবারিক দাতব্য প্রতিষ্ঠান এনএনকে ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে রাঙ্গুনিয়ায় ২৪টি নতুন মসজিদ বিল্ডিং করে দিয়েছি। রাঙ্গুনিয়ার প্রতিটি মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডাসহ সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ পেয়েছে। গত ১৫ বছর সবার জন্য আমার দরজা খোলা রেখেছি, পাঁচ বছর পর আমি আপনাদের দুয়ারে এসেছি, আপনারা দয়া করে আপনাদের দুয়ারটি আমার জন্য খুলে দেবেন। ৭ জানুয়ারি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন সেই প্রত্যাশা রইল।’
আওয়ামী লীগের জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা এ নির্বাচনি প্রচারণা কার্যক্রমে যোগ দেন।