অনলাইন: ০৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দ্য এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস (আনফ্রেল)। এশিয়ায় গণতন্ত্র প্রচার, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে কাজ করা থাইল্যান্ডভিত্তিক স্বধীন এই সংস্থা শুক্রবার (০৫ জানুয়ারি) নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলেছে: প্রকৃত নির্বাচন এবং নির্বাচনী প্রতিযোগিতার অভাবের ঝুঁকিতে থাকা এই নির্বাচন গণতান্ত্রিক নীতি এবং আন্তর্জাতিক নির্বাচনী মানদণ্ড (যেগুলো নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বৈধতা মূল্যায়ন করে) সম্পর্কে গুরুতর প্রশ্ন উত্থাপন করে বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা হচ্ছে।
আনফ্রেল বিশ্বাস করে যে, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় জবাবদিহিতা, ন্যায্যতা এবং অন্তর্ভুক্তির অনুপস্থিতির কারণে প্রকৃত নির্বাচন এবং নির্বাচনী প্রতিযোগিতার অভাবের ঝুঁকি উদ্ভূত হয়েছে। এতে বিরোধীদের উপর দমন-পীড়ন, রাজনৈতিক স্বাধীনতার সীমাবদ্ধতা, নিরপেক্ষ তথ্যে সীমিত প্রবেশাধিকার এবং রাজনৈতিক সহিংসতার ব্যাপকতার মতো উল্লেখযোগ্য নির্বাচনী চ্যালেঞ্জের জন্ম হয়েছে।
নির্বাচনী সহিংসতায় বিধ্বস্ত বর্তমান নির্বাচনী পরিবেশ মূলত বিরোধী দলসমূহ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের টার্গেট করছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন দেওয়া, হাতবোমা নিক্ষেপ এবং ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষের খবর প্রকাশিত হয়েছে।
এই সংঘর্ষের ফলে অসংখ্য মানুষ আহত হয়েছেন এবং দুঃখজনকভাবে প্রাণহানিও হয়েছে। তার উপর, ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক সহিংসতার বিষয়গুলো নির্বাচন কমিশন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহ অপর্যাপ্তভাবে মোকাবেলা করেছে। নির্বাচনী সহিংসতা এবং নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘনের মাত্রাকে কম গুরুত্ব দেওয়া বিবৃতিগুলো নিরপেক্ষতা এবং তদারকি ব্যবস্থার কার্যকারিতা সম্পর্কে উদ্বেগকেই বাড়িয়ে তোলে।
ক্ষমতাসীন সরকার, পক্ষপাতদুষ্ট রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এবং নির্বাচনের বিরুদ্ধে করা মিছিলগুলোতে জোরপূর্বক বাধা দেওয়া এবং বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনার কথা জানা গেছে। ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আয়োজিত শান্তিপূর্ণ সমাবেশ পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের জোরপূর্বক বাধার সম্মুখীন হয়েছিল। ওই ঘটনার সময় ঢাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও পুলিশ জোরপূর্বক তালা দিয়েছিল। যেটি আজও তালাবদ্ধ রয়েছে।
বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করার জন্য চাপ দিতে গণ-সংযোগ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ছয়-দলীয় রাজনৈতিক জোট- গণতন্ত্র মঞ্চকে গত ২২ ডিসেম্বর মিছিল করতে বাধা দেয় পুলিশ। ঢাকাসহ সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার উদ্বেগজনক মোড় নিয়েছে ।