সাতক্ষীরা-২ (সদর) নির্বাচনী এলাকায় স্বাধীনতা পরবর্তী থেকে আজ র্পযন্ত ১২টি নির্বাচনে ৩বার আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীরা জয়লাভ করে। এছাড়া বিএনপি একবার, জামায়াত ৪বার, জাতীয় পার্টি ৩ বার এবং মুসলিম লীগ প্রার্থী একটি নির্বাচনে বিজয়ী হয়।
সাতক্ষীরা সদর আসনে বিপুল ভোটে বিজয়ের পথে জাতীয় পাটি মনোনীত নৌকার প্রার্থী আশরাফুজ্জামান আশু। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ১৩৮ টি কেন্দ্রের মধ্যে ১০০ কেন্দ্রের বেসরকারী ফলাফল পাওয়া গেছে।
৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩১১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন মীর মোস্তাক আহমেদ। তার নিকটতম বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জামায়াতের মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক পেয়েছিলেন ২৭ হাজার ৭১১ ভোট।
অধিকাংশ দলের বর্জনের মুখে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-২ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে ২২ হাজার ৮৫৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ সাইফুল করিম সাবু পেয়েছিলেন ১৫ হাজার ৭৮৯ ভোট।
সব দলের অংশগ্রহণে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-২ আসনে নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী এমএ জব্বার। তিনি পেয়েছিলেন ১ লাখ ৩৩ হাজার ৪২২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতের আব্দুল খালেক মন্ডল পেয়েছিলেন ১ লাখ ১৪ হাজার ৫৫৭ ভোট।
সবদলের অংশগ্রহণে ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে জামায়াতের আব্দুল খালেক মন্ডল ১ লাখ ২৪ হাজার ২০৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মো.নজরুল ইসলাম পেয়েছিলেন ৬৯ হাজার ৮৬১ ভোট।
সবদলের অংশগ্রহণে ১২ জুন ১৯৯৬ তারিখে অনুষ্ঠিত ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে জামায়াতের কাজী সামছুর রহমান ৫৪ হাজার ০৯৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির সৈয়দা রাজিয়া ফয়েজ পেয়েছিলেন ৫৩ হাজার ৭৮৭ ভোট।
অধিকাংশ দলের বর্জনের মুখে ১৫ ফ্রেব্রুয়ারি ১৯৯৬ তারিখে অনুষ্ঠিত ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সাতক্ষীরা-২ আসনে নির্বাচিত হন বিএনপির এড. সামসুল হক (২)। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন এমএ গফুর।
সব দলের অংশগ্রহণে ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯১ অনুষ্ঠিত ৫ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে জামায়াতের কাজী শামসুর রহমান ৪৫ হাজার ৫৪৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের এএফএম এন্তাজ আলী। তিনি পেয়েছিলেন ৩০ হাজার ৭৬৭ ভোট।
অধিকাংশ দলের বর্জনের মুখে ৩মার্চ ১৯৮৮ তারিখে অনুষ্ঠিত ৪র্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-২ আসনে নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির হাবিবুর রহমান। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাসদের কুদরত-ই-খোদা।
সরকার বিরোধী একাংশের বর্জনের মুখে ৭ মে ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত ৩য় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে জামায়াতের কাজী শামসুর রহমান ৩০ হাজার ৪০৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মমতাজ আহমেদ পেয়েছিলেন ১৯ হাজার ৮৬৭ ভোট।
সকল দলের অংশগ্রহণে ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯ তারিখে অনুষ্ঠিত ২য় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-২ আসনে মুসলিম লীগের খান এ সবুর ৩১ হাজার ৬৩৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মমতাজ আহমেদ পেয়েছিলেন ২১ হাজার ৯০২ ভোট। খান এ সবুর খুলনার একাধিক আসনে নির্বাচিত হওয়ায় এই আসনটি ছেড়ে দেওয়ায় উপ-নির্বাচনে মুসলিম লীগের সৈয়দা রাজিয়া ফয়েজ বিজয়ী হন।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত ১ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-কলারোয়ার একাংশ নিয়ে গঠিত আসনে আওয়ামী লীগের সৈয়দ কামাল বখত ৪২ হাজার ৪১৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ন্যাপের এড. সামসুল হক (২) পেয়েছিলেন ২৬ হাজার ৫৭২ ভোট।
স্বাধীনতা পূর্ব ১৯৭০ সালের ১৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে খুলনা-১৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মমতাজ আহম্মদ ৪০ হাজার ৯১১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতে ইসলামীর শেখ আবুল কাসেমের প্রাপ্ত ভোট ১২ হাজার ৬৫০।
স্বাধীনতা পূর্ব ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে খুলনা-৭ আসনে (সাতক্ষীরা সদর-কলারোয়া-তালা-দেবহাটা ও আশাশুনি) এড: মো: আব্দুল গফফার ৭৯ হাজার ৫২০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নেজামে ইসলামীর মাওলানা আব্দুস সাত্তারের প্রাপ্ত ভোট ২৪ হাজার ৪২৪।
জেলা নির্বাচন অফিস জানায়, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে সাতক্ষীরা-০২ (সদর) আসনে এবার মোট ভোটার ৪ লাখ ৬০৮জন। এরমধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৯৯ হাজার ২১৭জন, নারী ২ লাখ ১ হাজার ৩৮৮জন এবং হিজরা ভোটার রয়েছেন ৩জন। সদরে এবার মোট ভোট কেন্দ্র ১৩৮টি। এরমধ্যে ১৫টি অস্থায়ী ভোট কক্ষসহ মোট ৮২৬টি ভোট কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা-২ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছেন ৭জন। এরমধ্যে জাতীয় পাটি মনোনীত লাঙ্গলের প্রার্থী মো: আশরাফুজ্জামান, ন্যাশনাল পিপিলস পার্টির (এনপিপি) আম প্রতীকের প্রার্থী মো. আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) এর নোঙ্গর প্রতীকের প্রার্থী মো. কামরুজ্জামান বুলু, তৃণমূল বিএনপির সোনালী আঁশ প্রতীকের প্রার্থী মোস্তফা ফারহান মেহেদী, স্বতন্ত্র কাচি প্রতীকের এনছান বাহার বুলবুল, স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকের মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এবং স্বতন্ত্র ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী মো. আফসার আলী। প্রার্থীদের মধ্যে কাচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এনছান বাহার বুলবুল লাঙ্গলের পক্ষে ভোট চেয়ে প্রচার অভিযানে অংশ নেন।