জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, এখন পর্যন্ত বিরোধী দল হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো সিগন্যাল পাইনি। তবে আশা করছি, সংসদ অধিবেশন শুরুর আগেই স্পিকারের কাছ থেকে আমরা একটা মতামত পাব হয়ত।
শনিবার বিকালে রংপুর নগরীর সেনপাড়ার স্কাই ভিউ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের এসব কথা বলেন।
তিন দিনের ব্যক্তিগত সফরে শনিবার রংপুর এসে প্রথমে পল্লী নিবাসে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কবর জিয়ারত করেন জিএম কাদের। পরে স্কাই ভিউতে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে কথা বলেন তিনি।
জিএম কাদের বলেন, বর্তমান সংসদে প্রধান দুটি দলের মধ্যে একটি আওয়ামী লীগ। নৌকা মার্কা নিয়ে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে দল হিসেবে সরকার গঠন করেছে। তারপরই লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে জাতীয় পার্টির আমরা ১১ জন সংসদ সদস্য আলাদা আরেকটি রাজনৈতিক দল। আর যারা রয়েছেন তারা আওয়ামী লীগের সহমতের আওতার ভেতরে। সেই কারণে আমরা মনে করি সরকারের বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় পার্টি একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, সরকার যদি জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দল হিসেবে অবস্থান না-ও দেয় তারপরও দেশ ও জাতির কল্যাণে সরকারের বিরুদ্ধে একমাত্র দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব থাকবে সরকারের সমালোচনা করা। জনগণের চোখে সরকারের যেসব ভুল-ত্রুটি ধরা পড়ছে সেগুলোকে সংসদে তুলে ধরা এবং সেগুলো সম্পর্কে সুপারিশ দিয়ে সরকারকে সহায়তা করে সঠিক পথে চাল না করা। কাজেই যেকোনো পর্যায়েই আমাদের সিদ্ধান্ত হলো আমরা বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করব। এই মুহূর্তে এটা বেশি জরুরি।
জিএম কাদের বলেন, বিরোধী দলের নেতা বা অন্যকিছু পদ-পদবি নির্ধারণ করা স্পিকারের আওতাধীন। যদিও আমরা জানি সার্বিকভাবে এটা (বিরোধী দল) জাতীয় পার্টির পাওয়ার কথা। আমরা যেটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সেটা জাতীয় পার্টির সংসদীয় দল থেকে আমাকে বিরোধী দলীয় নেতা, আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে উপনেতা এবং চিফ হুইপ হিসেবে মজিবুল হক চুন্নুর নাম আমরা প্রস্তাব করে একটা রেজুলেশন নিয়েছি। সেটা আমরা মাননীয় স্পিকারের কাছে পত্র মারফত পেশ করেছি।
নির্বাচনের পর ঢাকায় বিক্ষোভ হয়েছে। অনেককে বহিষ্কার করা হয়েছে। গুঞ্জন রয়েছে দল ভাঙছে আবার নতুন দলও হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে জাতীয় পার্টির অবস্থান প্রসঙ্গে জিএম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টি দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্রের শিকার। সরকার থেকে সরে আসার পর থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে অনেক ধরনের ষড়যন্ত্র হয়েছে। এক্ষেত্রে অনেকগুলো বিষয় কাজ করেছে। আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের একটা ব্যাপক জনপ্রিয়তা ছিল। সেটাকে বিভিন্নভাবে নষ্ট করার জন্য তার প্রতিপক্ষরা চেষ্টা করেছিল। অনেক ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচার হয়েছে, সেগুলো পরবর্তীতে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। তবে এখন ভাঙনের যে কথা বলা হচ্ছে, সেই সম্ভাবনা দেখছি না।
এ সময় জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসীর, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর জেলা সদস্য সচিব হাজী আব্দুর রাজ্জাক, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা আলাউদ্দিন মিয়া ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক আজমল হোসেন লেবু, কেন্দ্রীয় সদস্য ও রংপুর মহানগরের সিনিয়র সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন, সহ-সভাপতি জাহেদুল ইসলাম, জাতীয় যুব সংহতি রংপুর জেলার সভাপতি হাসানুজ্জামান নাজিম, সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মাসুদ মাসুদ নবী মুন্না উপস্থিত ছিলেন।