কুষ্টিয়া শহরের মঙ্গলবাড়িয়া এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে পাশাপাশি দুটি রশিতে ঝুলন্ত অবস্থায় পিতা ও তাঁর ৭ বছর বয়সী ছেলের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে কুষ্টিয়া মডেল থানা–পুলিশ তাঁদের লাশ উদ্ধার করে।
পুলিশের ধারণা, ছেলেকে হত্যার পর বাবা আত্মহত্যা করতে পারেন। লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
লাশ উদ্ধার হওয়া রেজাউল করিম ওরফে মধু (৩৮) শহরের আলফা মোড় এলাকার বিষ্ণুপদ রায়ের ছেলে। আট বছর আগে ধর্মান্তরিত হয়ে মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের শেফালি খাতুনকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। ধর্মান্তরিত হওয়ার আগে তাঁর নাম ছিল মধুসূদন রায়। রেজাউলের ছেলে মুগ্ধের বয়স ৭ বছর। মঙ্গলবাড়িয়া এলাকায় রেজাউলের গয়না তৈরির ছোট্ট একটি দোকান ছিল। সর্বশেষ তিনি এক বন্ধুর দোকানে কাজ করতেন।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, স্ত্রী অসুস্থ থাকায় বেশ কয়েক দিন ধরে তাঁরা আলফা মোড়ের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। আজ দুপুর ১২টার দিকে ছেলে মুগ্ধকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন রেজাউল।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাড়িটির আশপাশে উৎসুক মানুষের ভিড়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করছে। সেখানে একটি অটোরিকশায় শেফালী অচেতন হয়ে আছেন। সঙ্গে থাকা স্বজনেরা তাঁর জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ধর্মান্তরিত হওয়ার পর রেজাউল জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম সংশোধন করতে গিয়ে বেশ জটিলতায় পড়েন। এ জন্য ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করাতে পারছিলেন না। সেই ক্ষোভ ও হতাশায় ছেলেকে হত্যার পর তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সোহেল রানা বলেন, এখনই নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাচ্ছে না। আত্মহত্যা ও হত্যা দুটি ঘটনাই থাকতে পারে। ছেলেকে হত্যার পর বাবা আত্মহত্যা করতে পারেন। স্বজনেরা জানিয়েছেন, ধর্মান্তরিত হওয়ার পর রেজাউল এনআইডি সংশোধন নিয়ে জটিলতায় পড়েছিলেন। এ জন্য ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করাতে পারেননি। এ নিয়ে ক্ষোভ ছিল। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।