সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে অনুশীলন খাতা নিয়ে ব্যবসা করার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে অনুশীলন খাতা নিয়ে ব্যবসা করার অভিযোগ উঠেছে। ২২টাকার খাতা ৪৬টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। স্লিপ ফান্ডের টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে ওই কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। ‘ছন্দ ছড়ায় রাসেল সোনা’ বই বিক্রি নিয়ে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শিক্ষা সামগ্রী নিয়ে ব্যবসা করার অভিযোগ উঠেছে। কর্মকর্তারা ২২টাকার খাতা বিক্রি করছেন ৪৬ টাকায়। প্রতি খাতায় লাভ করছেন ২৪টাকা। খোদ শিক্ষা অফিসের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠায় অভিভাবকরা রীতিমত শঙ্কিত। ক্ষুব্ধ তো বটেই।

 


শিক্ষা সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, সাতক্ষীরা সদরের আলিপুর ক্লাস্টার ও মহাদেবনগর ক্লাস্টারের আওতায় ৫৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সুন্দর হাতের লেখা অনুশীলনের জন্য বাংলা খাতা ও ইংরেজি খাতা খাতা বিতরণের সময় অনিয়মের বিষয়টি নজরে আসে। আলিপুর ও মহাদেবনগর ক্লাস্টারের ৫৪টি স্কুলে ছাত্র প্রতি তিনটি করে খাতা কিনতে বাধ্য করা হয়।
সূত্রমতে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্লিপের প্রথম কিস্তির সমুদয় অর্থ দিয়ে এ খাতা ক্রয় করতে বাধ্য করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে খাতা বিতরণের ক্লাস্টারের সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবদুল গনি জড়িত বলে অভিভাবকরা অভিযোগ করেন।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল গনির নির্দেশে ক্লাস্টারের সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম সাতক্ষীরা শহরের ‘ভাই ভাই প্রেস’র আমিনুর রহমানের নিকট থেকে ২২টাকা দরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর বাংলা খাতা ও ইংরেজি খাতা কিনে তা ৫৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নিকট ৪৬টাকা দরে বিক্রি করছেন। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা স্লিপের টাকায় ওই কর্মকর্তাদের নিকট থেকে চড়া দামে খাতা ক্রয় করে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করেন। এতে প্রায় ১২ লক্ষাধিক টাকার খাতা বিতরণ করছেন। ১২লক্ষ টাকার মধ্যে খাতা প্রতি নজরুল ইসলাম রেখেছেন ১০ টাকা এবং শিক্ষা অফিসার আব্দুল গনি রেখেছেন ৫টাকা কমিশন। এভাবে তারা দুটি ক্লাস্টারে ২৮ হাজারের অধিক খাতা বিতরণ করেছেন বলে জানা গেছে।
এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টারের আওতাধীন শিক্ষকরা মুখে ছিপি লাগিয়ে রেখেছেন। মুখ খুললেই তাদের বিরুদ্ধে শিক্ষা অফিসের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে-এমন ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায় না। ইতোপূর্বে ‘ছন্দ ছড়ায় রাসেল সোনা’ বই বিক্রিতেও একই ধরণের অভিযোগ ওঠে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে। এরপর গাছকাটার অভিযোগ ওঠে। বিভিন্ন স্কুলের প্রাচির নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।
শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় অভিভাবকরা রীতিমত হতাশ। অভিভাবকরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

 

Please follow and like us:

Check Also

দেবহাটা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ৯ প্রার্থীর প্রতিক বরাদ্দ

দেবহাটা প্রতিনিধি: আগামী ২১ মে আসন্ন ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ২য় ধাপে দেবহাটায় ভোট গ্রহন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।