নিজস্ব প্রতিনিধি: সাধারণ রোগীদের সুবিধার্থে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির আওতায় সাইকেল ও মোটর সাইকেল গ্যারেজ করা হলেও প্রতিনিয়ত হয়রানী ও দুর্ব্যবহারের শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ রোগীর স্বজনদের। কিছু বখাটে যুবকদের দ্বারা গ্যারেজটি নিয়ন্ত্রণ করায় ইচ্ছামত অর্থ আদায় এবং রোগীদের স্বজনদের সঙ্গে বাকবিতন্ডাসহ অসভ্য আচরণ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও হাসপাতাল চত্বরে রোগী নিয়ে আসা ইজিবাইক ও ভ্যান চালকদের সাথে চরম দুর্ব্যবহার করে গ্যারেজ পরিচালনায় নিয়োজিত এসব বখাটে যুবকরা।
শুক্রবার ও শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির আওতায় সাইকেল ও মোটর সাইকেল গ্যারেজে সাইকেল প্রতি ৫টাকা এবং মোটরসাইকেল প্রতি ১০টাকা নির্ধারিত থাকলেও এখন সাইকেল প্রতি ১০টাকা এবং মোটরসাইকেল প্রতি ২০টাকা হারে আদায় করা হচ্ছে।
হাসপাতাল চত্ত্বরে সাইকেল ও মোটরসাইকেল গ্যারেজ হওয়ায় রোগির স্বজনদের সুবিধা হলেও বর্তমানে গ্যারেজ কর্তৃপক্ষের অসভ্য আচরণ আর অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ফলে ভোগান্তি বেড়েছে। হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীর স্বজনরা বলেন, ৫/১০ মিনিটের জন্য যদি কেউ হাসপাতালে আসেন তার জন্য ২০ টাকা ভাড়া প্রদান করা কষ্টদায়ক। আর ভাড়া না দিলে তার সঙ্গে অসৌজন্যমুলক আচরণ করা দন্ডনীয় অপরাধ। এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের নজর দেওয়া উচিৎ। প্রয়োজনে সমন্বয়ের মাধ্যমে সেবার মূল্য তালিকা স্থাপনের দাবী জানান তারা।
স্থানীয়রা জানান, এখানে গরীব ও সাধারণ মানুষ চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন এবং ভর্তিকৃত রোগীর স্বজনরা প্রতিদিন কয়েকবার আসেন। প্রতিবার ২০টাকা করে ভাড়া দেওয়া অনেকের জন্য কষ্টকর হচ্ছে এবং টিকিট না নিয়ে হাসপাতাল চত্ত্বরে সাইকেল বা মোটরসাইকেল রাখা হলে যানবাহনের ক্ষতি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে দায়িত্বরত গ্যারেজ কর্মচারী জানান, ৪ লক্ষ টাকা দিয়ে গ্যারেজ লিজ নেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল চত্বরে কোন সাইকেল, মোটরসাইকেল, ভ্যান, ইজিবাইক রাখলে টাকা আদায় করা হবে। সংবাদ সংগ্রহের কাজে হাসপাতাল চত্বরে আগত সাংবাদিকদের কাছ থেকেও টাকা আদায় করা হবে বলে জানান তিনি। গ্যারেজের বখাটে যুবকদের দ্বারা শুধু রোগীর স্বজনরা নয়, সংবাদ সংগ্রহে আসা সংবাদকর্মীরাও দুর্ব্যবহারের শিকার হচ্ছে।
শনিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় একটি পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে মোটর সাইকেল রেখে হাসপাতালের ভিতরে যান একজন সংবাদকর্মী। ৫মিনিট পর ফিরে আসার সাথে সাথে গ্যারেজে কর্তৃপক্ষ ২০টাকা দাবী করেন। এসময় সাংবাদিক পরিচয় দিলে বখাটে যুবকরা তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে বলতে থাকে, সাংবাদিক আমরা পুষে থাকি, এসব সাংবাদিক আমাদের পকেটে থাকে। সংবাদ সংগ্রহের কাজে আসলেও টাকা দিতে হবে বলে জানিয়ে দেন এবং ২০টাকা নেন। এব্যাপারে কোন তর্ক বিতর্কে না গিয়ে টাকা দিয়ে তিনি চলে আসেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে সচেতন মহলের দাবী সাধারণ রোগীদের সুবিধার্থে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির আওতায় সাইকেল ও মোটর সাইকেল গ্যারেজে সাধারণ মানুষ যাতে হয়রানী ও দুর্ব্যবহারের শিকার না হয়, সেজন্য সেবার মূল্য তালিকা স্থাপনসহ গ্যারেজ পরিচালনায় বখাটে যুবকদের অপসারণের দাবী জানিয়েছেন।