স্বামীকে আটকে গৃহবধূকে গণধর্ষণ, ছাত্রলীগ নেতা আটক, উত্তপ্ত জাহাঙ্গীরনগর

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে এক দম্পতিকে ডেকে এনে স্বামীকে আটকে রেখে তার স্ত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে পড়েছে জাহাঙ্গীরনগর। মূল অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। গণধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরে ছাত্রলীগ থেকে মোস্তাফিজুর রহমানকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়টির আবাসিক হলে ভুক্তভোগী নারীর স্বামীকে আটকে রেখে পাশের বোটানিক্যাল গার্ডেনে ওই নারীকে (১৯) গণধর্ষণ করা হয়। এই ঘটনায় রোববার সকাল সাতটার দিকে অভিযুক্ত চারজনকে আটক করা হয় বলে জানিয়েছেন সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন।

মূল অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান ছাড়া আরও আটক করা হয়- বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের সাগর সিদ্দিকী, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হাসানুজ্জামানকে। তারাও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত।

এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন বলেন, রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের এলাকা থেকে মূল অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমানকে আটক করা হয়। এর আগে তাকে পালাতে সহযোগিতা করায় তিনজনকে আটক করে পুলিশ।

শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের পাশের বোটানিক্যাল গার্ডেনে বহিরাগত ওই নারীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।

পূর্ব পরিচিত হওয়ায় ওই দম্পতিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেকে আনে মামুন। পরে তার স্বামীকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের ‘এ’ ব্লকের ৩১৭ নম্বর কক্ষে আটকে রাখেন অভিযুক্তরা। স্বামীর কাছে নেওয়ার কথা বলে বোটানিক্যাল গার্ডেনে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী।

এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীর স্বামী।

এদিকে ধর্ষণের ঘটনা জানাজানির পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় তারা ‘ক্যাম্পাসে ধর্ষক কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘ধর্ষণমুক্ত ক্যাম্পাস চাই’, ‘ধর্ষকদের পাহারাদার, হুঁশিয়ার সাবধান’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ.স.ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, এ ধরণের বিষয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। মূল অভিযুক্ত ও অভিযুক্তকে পালাতে সহযোগিতাকারী সবাইকে মামলার অন্তর্ভূক্ত করার ব্যাপারে আশুলিয়া থানা পুলিশের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কথা হয়েছে।

Please follow and like us:

Check Also

নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ, বাংলাদেশিদের মৌলিক স্বাধীনতা চর্চার সক্ষমতা দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশে চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের কথা আরও একবার জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে ২০শে জুলাই …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।