মিয়ানমারের স্বাধীনতাকামী সংগঠন আরাকান আমি (এএ) বিদ্রোহীদের সঙ্গে চলমান সংঘাতে টিকতে না পেরে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে বিজিবির আশ্রয় পেয়েছে মিয়ানমারের বর্ডারগার্ড পুলিশ (বিজিপি)।
বান্দরবানে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে গতরাতেও দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে। এতে আতঙ্কে সীমান্তবাসীরা।
এদিকে মিয়ানমারের স্বাধীনতাকামী সংগঠন আরাকান আমি (এএ) বিদ্রোহীদের সঙ্গে চলমান সংঘাতে টিকতে না পেরে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে আশ্রয় নিয়েছে তুমব্রু সীমান্তের ৬৮ জন এবং ঘুমধুম সীমান্তের ৩৭ জন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্য। আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমার সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধও রয়েছেন। গুলিবিদ্ধ আহত দুজনকে কক্সবাজারে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম ও আনু মোহাম্মদ বলেন, মিয়ানমার বাহিনীর ছোড়া গুলিতে রোববার দুই বাংলাদেশি নাগরিক গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের মধ্যে। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে যানবাহন ও লোকজনের চলাচল সীমিত করেছে প্রশাসন। বিদ্রোহীদের তোপের মুখে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে তুমব্রু সীমান্তের ওপারের মিয়ানমার ক্যাম্পের ৬৮ জন এবং ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে ক্যাম্পের ৩৭ জন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্য।
জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা জানান, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সামরিক জান্তা বাহিনীর সঙ্গে স্বাধীনতাকামী সংগঠন আরকান আর্মির (এএ) মধ্যে তুমুল সংঘাত চলছে। গত শনিবার থেকে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দুটি ক্যাম্প দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে আরাকান আর্মি। ইতোমধ্যে ক্যাম্পগুলোর কিছুটা অংশ দখলে নিয়েছে বিদ্রোহীরা। তবে মিয়ানমার সরকারি বাহিনী হেলিকপ্টার থেকে বোমা ছোড়ার মাধ্যমে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করছে।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, সীমান্তে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ায় সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে যানবাহন ও লোকজনের চলাচল সীমিত করা হয়েছে। সীমান্তবর্তী ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়েছে। সীমান্তে টহল বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা চৌকিগুলোতে সতর্কাবস্থায় রয়েছে বর্ডার গার্ড বিজিবি।
বিজিপি সদস্যদের ফেরত পাঠানো হবে জানিয়ে গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তাদেরকে এক জায়গায় রাখা হয়েছে। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে (বিজিবি) মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন যেন তারা এদেরকে নিয়ে যান।’
আরাকানের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সরকারের কাছে কী তথ্য আছে- সে প্রশ্নে কামাল বলেন, ‘আরাকান আর্মি নামে এক বিদ্রোহী গ্রুপ রাখাইন সাম্রাজ্যের একের পর এক জায়গা দখল করে নিচ্ছে। ক্রমাগত তারা শক্তিশালী হয়ে আরো সামনের দিকে যাচ্ছেন। সেখানে আর্মির সঙ্গে আরাকান আর্মির যুদ্ধ চলছে। তাদের একের পর এক ঘাঁটিগুলো আরকান আর্মি দখল করে নিচ্ছে।‘
‘আমাদের বর্ডারের সঙ্গে সংলগ্ন যেগুলো ছিল সেগুলোও তারা দখল করে নিয়েছে,’ বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।