আমরা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে : ড. ইউনূস

নিজেদের প্রতিষ্ঠান ‘জবরদখল’ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জীবনে সবচেয়ে ‘ভয়ঙ্কর’ পরিস্থিতিতে পড়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমার বাড়িতে এসে একজন বলল, এটা আমার বাড়ি, আপনি চলে যান।’’

মিরপুরের চিড়িয়াখানা সড়কে ১৪ তলা টেলিকম ভবনে ‘গ্রামীণ পরিবারের’ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংক ‘জবর দখল’ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন নোবেলবিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি বলছেন, গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষ থেকে গত ১২ ফেব্রুয়ারি ওই ভবনে থাকা আটটি অফিস দখল করে তালা মেরে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে পুলিশের কাছে আইনি সহায়তা চেয়েও তারা পাননি।

সম্প্রতি গ্রামীণ ব্যাংকের তরফ থেকে গ্রামীণ টেলিকম ও গ্রামীণ কল্যাণের পরিচালক পদে কয়েকজনকে মনোনীত করার পাশাপাশি এ দুই কোম্পানির চেয়ারম্যান পদে ইউনূসের বদলে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম সাইফুল মজিদকে মনোনীত করা হয়।

ইউনূসের ভাষায়, এটা দেশবাসীর সামনে তাকে ‘হয়রানি’ করা এবং তার সামাজিক ব্যবস্যা প্রতিষ্ঠানকে ‘ধ্বংস করার নীল-নকশা’ ছাড়া আর কিছু নয়।

শ্রম আইনের একটি মামলায় ইউনূসের সাজা এবং আরেক মামলায় তার বিরুদ্ধে দুদকের অভিযোগপত্র অনুমোদন নিয়ে আলোচনার মধ্যেই বৃহস্পতিবার সকালে টেলিকম ভবনের নিচতলায় সংবাদ সম্মেলনে আসেন ইউনূস, যিনি প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে দীর্ঘদিন গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি ছিলেন।

তিনি বলেন, “আমার ঘর জবর দখল হয়ে যাচ্ছে। আমরা পুলিশকে জানিয়েছিলাম, একটা জিডি করেছিলাম। জিডির কপি নিয়ে পুলিশ এসেছিল, কিন্তু কোনো সমাধান দেয়নি। আমরা অফিস করতে পারছি না।”

গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল ইসলাম এবং গ্রামীণ কল্যাণের ব্যবস্থাপনা পরিচালক একে এম মঈনুদ্দিন চৌধুরী ছাড়াও আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, অধিকারকর্মী রেহনুমা আহমেদ ও ফরিদা আখতার সংবাদ সম্মেলনের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

ইউনূসের অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূর মোহাম্মদ এবং চেয়ারম্যান সাইফুল মজিদকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা ধরেননি। ফোন ধরেননি ঢাকা মহানগর পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপ কমিশনার জসিম উদ্দিন মোল্লা এবং শাহ আলী থানার ওসি মওদুদ হাওলাদারও।

ইউনূসের ব্রিফিংয়ের পর মিরপুর দুই নম্বরে গ্রামীণ ব্যাংক ভবনের সামনে গেলে নিরাপত্তা কর্মীরা সাংবাদিকদের ভেতরে ঢুকতে দেননি। নিরাপত্তা কর্মীরা জানিয়ে দেন, ভেতরে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান, এমডি বা কথা বলার মত অন্য কেউ নেই।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকালেও কয়েকজন নারী ঝাড়ু হাতে টেলিকম ভবনের সামনে মিছিল করেন। তারা কেউ ইউনূসর কাছে টাকা পান বলে দাবি করেন, আবার কারো দাবি, মোবাইলের কল রেট অনেক বেশি এ কারণে তারা ঝাড়ু হাতে নেমেছেন।

সেই প্রসঙ্গ ধরে ইউনূস বলেন, “এভাবে দেশ চলছে কীভাবে। আমাদের বিরুদ্ধে ঝাড়ুমিছিল হচ্ছে। আমরা আদালতের শরণাপন্ন হব।”

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।