সাতক্ষীরায় এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় প্রথম দিনে অনুপস্থিত ২শ’ ৭৪,বহিস্কার-১

সাতক্ষীরা জেলায় এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রথম দিন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অতিবাহিত হয়েছে। বাংলা প্রথম পত্রের এ পরীক্ষায় নলতা মাদ্রাসা কেন্দ্রে একজন শিক্ষার্থী নকল করার দায়ে বহিস্কৃত হয়েছে। এছাড়া এ পরীক্ষায় ২শ’ ৭৪ জন শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল।
জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর সাতক্ষীরা জেলার ২৮টি এসএসসি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ৯শ’ ০৭ জন। তবে এ পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল ৯২ জন। দাখিল পরীক্ষার ১২ টি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ছিল ৫ হাজার ৩শ’ ৭৭ জন। এ পরীক্ষায় নকল করার দায়ে একজনকে বহিস্কার করা হয়েছে। এছাড়া অনুপস্থিত ছিল ১শ’৬৬জন। ৮টি এসএসসি (ভোকেশনাল) কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ছিল ১ হাজার ১শ’ ১৬ জন। এ পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল ১৬ জন।
জেলা শিক্ষা অফিসার শাহাজাহান কবির বলেন,এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সার্বিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অপর দিকে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের তদারকি ছিল চোখে পড়ার মত। দিন ব‍্যপি প্রশাসনের উচ্চ পদস্ত কর্মকতারা বিভিন্ন পরিক্ষা কেন্দ্র মনিটারিং এবং সাতক্ষীরা নবারুন হাইস্কুল কেন্দ্র পরিদর্শন করেন সাতক্ষীরার এনডিসি সজীব তালুকদার সহ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নারায়ন চন্দ।

সাতক্ষীরাতে অংশ নিচ্ছেন ২৩ হাজার ৪শ’ জন পরীক্ষার্থী

সাতক্ষীরা জেলায় এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন মোট ২৩হাজার ৪শ’ জন পরিক্ষার্থী। সারাদেশের ন্যায় আজ বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু।
সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসার মো: শাজাহান কবির পত্রদূতকে জানান, এ বছর সাতক্ষীরা জেলায় ৪৮টি কেন্দ্রে মোট ২৩ হাজার ৪শ’ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। এরমধ্যে ২৮টি এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৬ হাজার ৯০৭জন, ১২টি দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৫ হাজার ৩৭৭জন এবং ০৮টি এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষা কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ১১৬জন। তিনি আরও বলেন, আমরা চলতি মাসের ৮ তারিখে জেলা প্রশাসক মো: হুমায়ুন কবির স্যারের সভাপতিত্বে ২০২৪ সালের এসএসসি, দাখিল, এসএসসি/দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষা সুষ্ঠু ও সুশৃংখলভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে প্রস্তুতিমূলক সভা সম্পন্ন করেছি। এবারের পরিক্ষা হবে সুষ্ঠু-সুন্দর এবং নকলমুক্ত পরিবেশে।
সূত্রমতে, সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ৮টি কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ৪ হাজার ৯৯৬জন। এরমধ্যে, সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ৮৫৭জন, সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ৬৪৭জন, নবারুণ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১ হাজার ১১১জন, সাতক্ষীরা প্রাণনাথ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৭৫২জন, ঝাউডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৫৬জন, এসএসসি (ভোকেশনাল)-সাতক্ষীরা সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ ২১৩জন, দাখিল-সাতক্ষীরা আলিয়া কামিল মাদ্রাসা ৫৩৪জন, আগরদাঁড়ী আমিনিয়া কামিল মাদ্রাসা ৬২৬জন।
কলারোয়া উপজেলায় ৬টি কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ৩ হাজার ১২৪জন। এরমধ্যে, কলারোয়া সরকারি গোপীনাথপুর, কলারোয়া মুরারিকাটি করুনাময়মিত্র, পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৬৪৯জন, সোনা বাড়িয়া সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৬৫৪জন, খোর্দ্দ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৪০জন, কলারোয়া গার্লস পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫৫৭জন। এসএসসি(ভোকেশনাল) কলারোয়া সরকারি গোপীনাথপুর, কলারোয়া মুরারিকাটি করুণামত্রি, পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৮২জন, দাখিল-কলারোয়া আলিয়া মাদ্রাসা ৬৪২জন।
তালা উপজেলায় ৯টি কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ৩ হাজার ৫৮৩জন। এরমধ্যে, তালা সরকারি ব্রজেন দে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫৮৫জন, কুমিরা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ৩৩৩জন, খলিষখালী মাগুরা সতীশ কলেজিয়েট ইনস্টিটিউট ৪৫৫জন, আমিরুন্নেসা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৬৯৫জন, শহীদ আলী আহম্মদ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪২৩জন, সুভাষিনী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৪৮জন, এসএসসি(ভোকেশনাল)-কুমিরা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ১৫৩জন, দাখিল-তালা আলিয়া মাদ্রাসা ২৯৬জন, পাটকেলঘাটা আল আমিন ফাজিল মাদ্রাসা ৩৯৫জন।
আশাশুনি উপজেলায় ৮টি কেন্দ্রে মোট পরিক্ষার্থী ৩ হাজার ৫৮০জন। এরমধ্যে, আশাশুনি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫১০জন, দর্গাপুর শ্রীধরপুর খাসবাগান রামনগর হোসেনপুর স্কুল এন্ড কলেজ ৪৮২জন, বুধহাটা বাহাদুরপুর ভুবন মোহন কলেজিয়েট স্কুল ৭৯৪জন, বড়দল আফতাব উদ্দিন কলেজিয়েট স্কুল ৪২৫জন, বিছট নিউ মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪০১জন, এসএসসি(ভোকেশনাল)-সুন্দরবন টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজ ৪৫জন, দাখিল-আশাশুনি আলিয়া মাদ্রাসা ৬১৩জন, গুনাকরকাটি আজিজিয়া খাইরিয়া কামিল মাদ্রাসা ৩১০জন।
কালিগঞ্জ উপজেলায় ৬টি কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ৩ হাজার ৫০২জন। এরমধ্যে, কালিগঞ্জ পাইলট সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১ হাজার ৪৭৩জন, নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৭৪৬জন, চাম্পাফুল আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৩০জন, এসএসসি (ভোকেশনাল)-কালিগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ ২২০জন, দাখিল-কালিগঞ্জ নাছরুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা ৩৫৭জন, নলতা মাদ্রাসা ২৭৬জন।
দেবহাটা উপজেলায় ৪টি কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ১ হাজার ২৮১জন। এরমধ্যে, দেবহাটা সরকারি বিপিন বিহারী মেমোরিয়াল পাবলিক ইনস্টিটিউশ ৪১১জন, পারুলিয়া সাগর শাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫৬৬জন, এসএসসি (ভোকেশনাল)-আহসানিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫২জন, দাখিল-সখিপুর আলিম মাদ্রাসা ২৫২জন।
শ্যামনগর উপজেলায় ৭টি কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ৩ হাজার ৩৩৪জন। এরমধ্যে, নকিপুর সরকারি হরিচরণ পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৭৭৫জন, নওয়াবেকী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৭২৬জন, নকিপুর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ৬০৬জন, এসএসসি (ভোকেশনাল)-পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ৮৮জন, শ্যামনগর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ ৬৩জন, দাখিল-শ্যামনগর কেন্দ্রীয় ফাজিল মাদ্রাসা ৬৩০জন, নওয়াবেকী বিড়ালক্ষী কাদেরিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা ৪৪৬জন।
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সুষ্ঠু ও সুশৃংখলভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক মো: হুমায়ুন কবির প্রস্তুতিমূলক সভায় সকলের সম্মতিক্রমে নি¤েœাক্ত সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছেন:
১. পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইন ১৯৮০ কঠোরভাবে প্রয়োগ করবেন। আর এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (সকল), দায়িত্বপ্রাপ্ত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটগণ, কেন্দ্র সচিব (সকল)।
২. পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে জনসাধারণের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার জন্য ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা জারি করা হবে। এটি বাস্তবায়ন করবেন বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, সাতক্ষীরা, উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ, (সাতক্ষীরা সদর উপজেলা ব্যতীত)।
৩. পরীক্ষা চলাকালীন এবং পরীক্ষা অনুষ্ঠানের পূর্বে বা পরে পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিগন ব্যতীত অন্যদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। এ সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশকারী অননুমোদিত ব্যক্তি বর্গের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এটি বাস্তবায়ন করবেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (সকল), কেন্দ্র সচিব (সকল)।
৪. জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সকল পরীক্ষা কেন্দ্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ ফোর্স এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের ব্যবস্থা করা হবে। এটি বাস্তবায়ন করবেন পুলিশ সুপার সাতক্ষীরা, বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাতক্ষীরা।
৫. উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ পরীক্ষা অনুষ্ঠানের ২/৩ দিন পূর্বে পরীক্ষা কেন্দ্রে পরিদর্শনপূর্বক সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সার্বিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এটি বাস্তবায়ন করবেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (সকল)।
৬. পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট পূর্বে সকল পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রবেশের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করতে হবে। পরীক্ষা শুরু ১০ মিনিট পূর্বে পরীক্ষার হলে উপস্থিত সকল পরীক্ষার্থীদের নিকট থেকে সব ধরনের অননুমোদিত কাগজপত্র/সামগ্রী সংগ্রহ করতে হবে। ৩০ মিনিট পর কোন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রবেশ বা পরীক্ষা গ্রহণের অনুমতি প্রদান করা যাবে না। এটি বাস্তবায়ন করবেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (সকল), কেন্দ্র সচিব (সকল)।

Check Also

কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ দেবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন

কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সচিবালয় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।