সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউব দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে হাত-পা ও মুখ বেঁধে খতনা করার সময় প্রতিবেশী কিশোরের হাতে শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার হিজলা গ্রামে এই হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনার ২ ঘণ্টা পর পার্শ্ববর্তী শিবপুর গ্রামে মামা বাড়ি থেকে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে পুলিশ অভিযুক্ত হামিম শেখকে আটক করেছে। অভিযুক্ত হামিম শেখ (১৭) হিজলা গ্রামের রমজান শেখের ছেলে। রাতেই শিশু শিহাবের মা বাদী হয়ে হামিম শেখকে আসামি করে চিতলমারী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
নিহত শিশুর বাবা ফরহাদ শেখ জানান, প্রতিদিনের মতো বাড়ির উঠানে খেলা করছিল শিশু শিহাব। সন্ধ্যা হয়ে গেলেও শিশুটির কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। পরিবার ও এলাকাবাসী খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে হামিমের ঘরের পাশে ভাঙাচোরা বাথরুমের মধ্যে শিহাবের হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দেখতে পায়। দ্রুত শিহাবকে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। এরপর অভিযুক্ত হামিমের ঘরের লেপের মধ্যে রক্তের চিহ্ন দেখতে পায়। এই সময় হত্যায় ব্যবহৃত রশি ও বিভিন্ন আলামত জব্দ করে।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেলুর রহমান জানান, বুধবার সন্ধ্যার কিছু আগে শিশু শিহাব বাড়ির উঠানে খেলা করার সময় খাবারের লোভ দেখিয়ে হামিমের ঘরে নিয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে বিকৃত মানসিকতা তৈরি হয়ে হাত-পা ও মুখ বেঁধে শিহাবকে খতনা করে। এ সময় শিশু সিয়াম মারা যায়। পরে বিভিন্ন জায়গায় তাকে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করে ঘরের বাইরে ভাঙাচোরা বাথরুমে রেখে পালিয়ে যায়।
পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে ও প্রযুক্তির মাধ্যমে অভিযুক্ত হামিমের নানা বাড়ি শিবপুর গ্রাম থেকে তাকে আটক করে। হামিম শেখ পুলিশের কাছে শিশু শিহাবকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে। তবে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হামিম শেখের কোনো অনুশোচনা বোধ হয়নি বলে পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান।