ক্লাসরুমে গুলি করার ঘটনায় সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক ডা. রায়হান শরীফকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ বুধবার (৬ মার্চ) এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউএনবিকে জানিয়েছে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আমিরুল হোসেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সিরাজগঞ্জের একটি আদালত ডা. রায়হানকে কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
মঙ্গলবার সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক বিল্লাল হোসেনের আদালতে রায়হানকে হাজির করার পর এ রায় দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় ব্যাপক নিন্দার ঝড় উঠলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গুলির ঘটনা খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে যায় কমিটি।
এ ঘটনায় শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শিক্ষার্থীরা সিরাজগঞ্জ-বগুড়া-৪ লেন মহাসড়কে ডা. রায়হানকে অবিলম্বে চাকরিচ্যুত ও কঠোর শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করে।
তাদের দাবি, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নিবন্ধন বাতিল, অভিযুক্তকে তার শিক্ষকের পদ থেকে স্থায়ীভাবে অপসারণে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন শিক্ষার্থীরা। শেষ পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্ত দলের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা।
গুলিবিদ্ধ তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমাল বর্তমানে চিকিৎসাধীন। সোমবার বিকালে ক্লাস চলাকালীন এ ঘটনা ঘটে। পরে তমালকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে ডা. রায়হানকে গ্রেফতার করা হয়, তার আগ্নেয়াস্ত্রটি জব্দ করে পুলিশ।
স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, ডা. রায়হান শরীফ অস্ত্র ও ছুরি বহনের জন্য পরিচিত ছিলে। তিনি বক্তব্যের সময় প্রকাশ্যে প্রদর্শন করতেন। শরীফ যখনই শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে তাদের উপস্থিতির বিরোধিতা করে তখনই তারা এই অস্ত্র দিয়ে হুমকি দেয় বলে জানা গেছে।
সোমবার পরীক্ষা চলাকালে তমালকে গালিগালাজ করার পর ডা. রায়হান তাকে গুলি করলে ওই শিক্ষার্থী আহত হয়। প্রাথমিক তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গেছে, ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটি অবৈধ, যার ফলে ডা. রায়হানের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে অতিরিক্ত অভিযোগ আনা হয়েছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা আব্দুল্লাহ আল আমিন সদর থানায় মামলা করেছেন।
সূত্র : ইউএনবি