গাজা সিটিতে ত্রাণ পাওয়ার অপেক্ষায় থাকা হাজার হাজার মানুষের ওপর ইসরাইলি বাহিনী গুলি চালানোর পর অন্তত ২১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই হামলাকে “পূর্বপরিকল্পিত গণহত্যা” বলে বর্ণনা করে জানিয়েছে যে ১৫০ জনেরও বেশি লোক আহত হয়েছে। ইসরাইল ছিটমহলে সাহায্য প্রবেশে বাধা এবং কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার কারণে খাদ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরবরাহের নিদারুণ সংকটে ভুগছে গাজার মানুষ। মরার ওপর খাঁড়ার ঘা-এর মতো এই হামলা তাদের যন্ত্রণাকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে। এর আগে বৃহস্পতিবার, কুয়েত গোলচত্বরে একই খাদ্য বিতরণ পয়েন্টে, ইসরাইলি বাহিনী কমপক্ষে ছয় ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করেছিল, এই ধরনের হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০০ জনেরও বেশি।প্রত্যক্ষদর্শীরা আল জাজিরাকে বলেছে যে ইসরাইলি বাহিনী হেলিকপ্টার, ট্যাঙ্ক এবং ড্রোন ব্যবহার করে খাবারের জন্য অপেক্ষারত হাজার হাজার লোককে লক্ষ্যবস্তু করেছে। যদিও ইসরাইলি সেনাবাহিনী অস্বীকার করেছে যে তারা জনতার উপর গুলি চালিয়েছিল। ইসরাইল সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র আভিচায় আদ্রাই এক্স-এ একটি পোস্টে বলেছেন, হামলার ঘটনাটি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।
নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের যোগাযোগ উপদেষ্টা শাইনা লো বলেছেন, দুর্গতদের ওপর চলমান হামলা সাহায্যকারী গোষ্ঠী এবং ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের মধ্যে যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটায়। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার মানুষদের একমাত্র ভরসা নানা দেশের পাঠানো ত্রাণ। মাঝে মাঝেই ট্রাক বোঝাই ত্রাণ এসে পৌঁছায় গাজার বিভিন্ন প্রান্তের আমজনতার কাছে। রীতিমতো হুড়োহুড়ি পড়ে যায় ট্রাক থেকে খাবার সংগ্রহের জন্য। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি পশ্চিম গাজার নাবুলসি এলাকায় ত্রাণ নিতে গিয়ে ইজরাইলি সেনার গুলিতে নিহত হয়েছিলেন ১০৪ জন।
আহতের সংখ্যা ছিল ৭০০রও বেশি। এনিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সেনা কর্তা জানিয়েছিলেন, ত্রাণ বোঝাই ট্রাকটি সেনা ট্যাঙ্কের খুব কাছে এসে গিয়েছিল। গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধ এখন ষষ্ঠ মাসে পড়লো। জাতিসংঘ সতর্ক করেছে যে ছিটমহলের অন্তত ৫ লক্ষ ৭৬ হাজার মানুষ – জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ – দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। আরও অ্যাক্সেসের অনুমতি দেওয়ার জন্য ইসরাইলের উপর বিশ্বব্যাপী চাপ বাড়ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার তার সর্বশেষ আপডেটে জানিয়েছে যে ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ৩১,৩৪১ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৭৩,১৩৪ জন আহত হয়েছে।
সূত্র : আলজাজিরা