নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. আবুল কালাম আজাদের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে গত নির্বাচনে করা খরচের টাকা তুলে নেয়ার বিষয়ে একটি বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছড়িয়ে পড়েছে। এ বক্তব্য ঘিরে নাটোরের রাজনীতিতে দিনভর তোলপাড় চলছে।
তাকে আরও বলতে শোনা যায়, আগের ভোটের সময় এক টাকাও খরচ হয়নি আমার। শুধু ব্যাংকে ২৫ লাখ টাকা জমা রাখতে হয়, ওটা রেখেছি। এক টাকাও খরচ নাই, ২৫ লাখ টাকাই তুললাম। ট্যাক্স ফ্রি ২৭ লাখ টাকা দিয়ে গাড়ি কিনেছিলাম। এক কোটি টাকা দিয়েও কিনতে পারতাম। আমার যখন টাকা নাই তখন ২৭ লাখ টাকা দিয়ে কিনেছি। এবার আমি কিনবো, ওই টাকা দিয়ে কিনবো। ওই যে টাকা, ওই টাকা তুলে নিবো আমি। খালি এক কোটি ২৬ লাখ টাকা তুলবো।
মঙ্গলবার লালপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন।
ওই অনুষ্ঠানে দেওয়া তার বক্তব্যের একটি ভিডিও ক্লিপ বুধবার রাতে ছড়িয়ে পড়ে। তার বিরোধী নেতাকর্মীরাও ভিডিও ক্লিপটি সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে জোরালো ভূমিকা রাখছেন বলে জানা গেছে।
তবে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সংসদ সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ এ বক্তব্যের বিষয়টি অস্বীকার করে বৃহস্পতিবার রাতে যুগান্তরকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার বক্তব্য খণ্ডিতভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। আমি এটা বলেছি যে, ‘আগের নির্বাচনে আমার তেমন কোনো টাকা খরচ হয়নি। তবে এবারের নির্বাচনে আমার ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। তাই বলে আমি কি ওই টাকা নেব? না নেব না। নির্বাচনের আগে অসুস্থ হয়ে আমি ঠিকমত নির্বাচনি কাজ করতে পারিনি, তবু আপনারা আমাকে নির্বাচিত করেছেন। আল্লাহ আমার জীবন বোনাস দিয়েছেন। তাই আমি সম্পূর্ণ নি:স্বার্থভাবে আপনাদের জন্য কাজ করে, আপনাদের সেবা করে প্রয়োজনে নি:স্ব হয়ে ফিরে যাবো। কিন্তু আমার বক্তব্য মাঝে মাঝে বাদ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খণ্ডিতভাবে প্রচার করা হচ্ছে। আমি খরচের টাকা তুলব এমন কথা বলিনি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আখতার বলেন, এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। উনার বক্তব্যে (সংসদ সদস্য) উনি বলেছেন, এটাতে আমার কোনো কথা নাই।
নাটোর জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ (অব.) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সরকারি অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে একজন সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক। একজন সংসদ সদস্যের কাছে দেশের মানুষ আরও গঠনমূলক বক্তব্যের প্রত্যাশা করে।