মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আরুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তার পরিষদের তিন সদস্যকে পিটিয়ে আহত করাসহ তাদের মোটরসাইকেল নদীতে ফেলে দেয়ার অভিযোগ ওঠেছে। আহত তিন ইউপি সদস্যকে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যানের চাচার পক্ষে না থেকে অন্য প্রার্থীর পক্ষে থাকায় ইউপি সদস্যদের ওপর হামলা হয়েছে বলে দাবি আহতদের। আরুয়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য জয়নাল আবেদীন জানান, তারা ৫ জন ইউপি সদস্য রোববার রাতে সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রহিম খানের ডাকে তার কাছে যান। রহিম খান প্রতি বছরের ন্যায় দুস্থদের মাঝে ঈদের শুভেচ্ছা তাদের মাধ্যমে বিতরণ করেন। যে কারণে এবারো রহিম খানের সঙ্গে তারা দেখা করে রোববার রাতে মোটরসাইকেলযোগে বাড়িতে আসছিলেন। রাত ১২টার দিকে ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য জমাত আলী ও ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য আয়নাল মোল্লাকে তাদের বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে কুষ্টিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে তাদের দুটি মোটরসাইকেল গতিরোধ করেন আরুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোনায়েম মোন্তাকিন খান অনিক ও তার লোকজন। এ সময় চেয়ারম্যান জানতে চান কোথায় যাওয়া হয়েছিল? রহিম খানের কাছে যাওয়ার কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে চেয়ারম্যান নিজে ও তার লোকজন তাদের ওপর ধারালো অস্ত্র, হাতুড়ি ও কাঠের বাটাম দিয়ে হামলা করে। এতে তার মাথায় ও পিঠে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মারাত্মক জখম হয়। তারা ইউপি সদস্য দেলোয়ারকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হাত ও পা ভেঙে দেয় এবং ইউপি সদস্য সোহেল রানাকে কাঠের বাটাম দিয়ে পিটিয়ে আহত করে।
তাদের ব্যবহৃত দুটি মোটরসাইকেল পদ্মা নদীতে ফেলে দেয়া হয়। তাদের ডাকচিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসার পর চেয়ারম্যান তার লোকজন নিয়ে চলে যায়। রাতেই স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আহত তিন ইউপি সদস্য মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি হন। সোমবার দুপুরে শিবালয় থানা পুলিশ মোবাইল ফোনে তাদের কাছ থেকে হামলার ঘটনার বিস্তারিত শুনেন। হাসপাতালে থাকার কারণে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে পারিনি।
আরেক ইউপি সদস্য সোহেল রানা বলেন- তাদের ওপর হামলা হয়েছে মূলত চেয়ারম্যানের চাচা বর্তমান শিবালয় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউর রহমান খান জানু এবারও নির্বাচন করবেন। অন্যদিকে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম খানও নির্বাচন করবেন। আমরা গরিব মানুষের জন্য রহিম খানের কাছ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা আনার কারণে আমাদের ওপর হামলা হয়েছে।আরুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোনায়েম মোন্তাকিন অনিক বলেন- তার তিন ইউপি সদস্যের সঙ্গে কারও মারামারি হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। সোমবার সারাদিন ভিজিএফের চাল বিতরণে ব্যস্ত থাকায় তাদের বিষয়ে আর খোঁজখবর নেয়া হয়নি। হামলার ঘটনায় আপনি জড়িত- এমন প্রশ্নের জবাবে ইউপি চেয়ারম্যান বলেন- কালরাতে কোথায় ঘটনা ঘটেছে আমি এর কিছুই জানি না। জড়িত থাকার প্রশ্নেই ওঠে না।
শিবালয় থানার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রউফ সরকার বলেন, ইউপি সদস্যদের মারধরের ঘটনা লোক মারফত শুনেছি। সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থলের পাশে পদ্মা নদীর পাড় থেকে পুলিশ দুটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে। এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।