উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি-জামাতের শতাধিক নেতা

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা: প্রথম ধাপে ১৫২টি উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মাঠে নেমেছেন বিএনপি-জামায়াতের শতাধিক নেতা। নিজেদের চেয়ারম্যান প্রার্থী ঘোষণা করে এরই মধ্যে গণসংযোগ শুরু করেছেন তারা। যদিও উপজেলা নির্বাচনে অংশ করা বা না করা নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত জানায়নি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তবে তৃণমূলের বিএনপির নেতারা বলছেন, এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থী মনোনয়ন দিচ্ছে না। ফলে ক্ষমতাসীন দলের যে কোনো নেতা চাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারবেন। আর এই সুযোগটি নিতে চান বিএনপির নেতারা। এদিকে জেলা ও উপজেলার নেতারা নিজেরা সিদ্ধান্ত নিয়ে চাইলে নির্বাচন অংশ নিতে পারেন বলে জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।

উপজেলা নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়েছেন কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলা বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক মো. মিলন কবির, রৌমারী উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ইমান আলী ও উপজেলা জামায়াতের আমির মোস্তাফিজুর রহমান। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দিলেও কক্সবাজার সদর উপজেলা জামায়াতের পক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শহিদুল আলম বাহাদুর ওরফে ভিপি বাহাদুর। মহেশখালীতে প্রার্থী হচ্ছেন বিএনপি নেতা হাবিব উল্লাহ হাবিব। কুতুবদিয়ায় জামায়াতের হয়ে নির্বাচনে অংশ নেবেন আ শ ম শাহরির চৌধুরী। ভোটে প্রস্তুতি নিয়েছেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী এবং কুতুবদিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি জালাল আহমেদ কুতুবী। সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় মাঠে রয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাপ মিয়া।

পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় মাঠে নেমেছেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শাজাহান আলী। হবিগঞ্জের আজমেরিগঞ্জে প্রার্থী পৌর বিএনপির আহবায়ক খালেদুর রশিদ ঝলক। ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে তৎপর রয়েছেন বিএনপির আবু তাহের ও ইসমাইল হোসেন। সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলায় প্রার্থী হচ্ছেন উপজেলা জামায়াতের আমির আরিফুর ইসলাম সোহেল। ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে তৎপরতা দেখাচ্ছেন বিএনপি সমর্থক ফারুক হোসেন মৃধা, যুবদলের উপজেলা সভাপতি কে এম ওবায়দুল বারী দিপু ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এজিএম বাদল আমিন।

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে উপজেলা বিএনপির সভাপতি শামীম হোসেন চৌধুরী, রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি সাজেদুর রহমান, গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান পেরা, কিশোরগঞ্জ সদরে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল আলম, নাটোরের লালপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আরিফ ও জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুল ওয়াহাব, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে সাবেক ছাত্রদল নেতা আবু হাসনাত তারেক, ধোবাউড়ায় বিএনপির সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদ আল রাজি কমল ও শামসুর রশিদ মজনু, ফুলপুরে পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমরান হাসান পল্লব, শেরপুরের শ্রীবরদীতে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন দুলাল, ঝিনাইগাতীতে জেলা বিএনপির সাবেক নেতা আমিনুল ইসলাম বাদশা, সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলা বিএনপির সভাপতি গণেন্দ্র কুমার সরকার, সাতক্ষীরার শ্যামনগরে উপজেলা বিএনপির আইন সম্পাদক মাসুদুল আলম দোহা, কুড়িগ্রামের রৌমারীতে উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ইমান আলী, পিরোজপুরে ইন্দুরকানীতে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফায়জুল কবির তালুকদার, পঞ্চগড় সদরে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবু দাউদ প্রধান, নাটোর সদরে বিএনপির ইশতিয়াক আহমেদ হীরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ইকবাল চৌধুরী, সাবেক সহসভাপতি ওমরাও খান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এ হান্নান, নারায়ণগঞ্জের বন্দরে আতাউর রহমান মুকুল, বদলগাছীতে উপজেলা বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার হারুনুর রশিদ, মহাদেবপুরে উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আব্দুস সাত্তার নান্নু ও উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, কুমিল্লার লাঙ্গলকোটে উপজেলা যুবদল নেতা মাজহারুল ইসলাম ছুপু এবং নলডাঙ্গায় বিএনপি নেতা মোশারফ হোসেন জিল্লুর ও সরদার আফজাল হোসেন।

লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর উপজেলায় জামায়াতের সাবেক উপজেলা আমির মাওলানা হুমায়ুন কবির মাঠে রয়েছেন। রায়পুর উপজেলায় মাঠে রয়েছেন উপজেলা জামায়াতের আমির ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা নাজমুল হুদা। রামগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য আকতার হোসেন প্রার্থী হতে মাঠে তৎপর রয়েছেন।

নীলফামারীর ডোমারে জেলা জামায়াতের আমির আব্দুর রশীদ, ডিমলায় জেলা নায়েবে আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার, লালমনিরহাটের হাতিবান্ধায় হাবিবুর রহমান সাতা, রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে জেলা জামায়াতের আমির আব্দুল খালেক, ঝিনাইদহ সদরে সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ড. মোহা. হাবিবুর রহমান, কালীগঞ্জে উপজেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি মাওলানা ওলিয়ার রহমান, কালীগঞ্জে জামায়াতের সেক্রেটারি খায়রুল হাসান, মৌলভীবাজারের বড়লেখায় উপজেলা জামায়াতের আমির এমাদুল ইসলাম, নাটোরের লালপুরে জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুল ওয়াহাব নির্বাচনের মাঠে নেমেছেন।

এ ছাড়া চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে জামায়াতের অ্যাডভোকেট হুসাইন মুহাম্মাদ আশরাফুদ্দিন, সিরাজগঞ্জ সদরে জেলা জামায়াতের প্রচার ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, শেরপুরের শ্রীবরদীতে জেলা জামায়াতের সাবেক আমির নুরুজ্জামান বাদল, সাতক্ষীরার শ্যামনগরে উপজেলা জামায়াত নেতা আব্দুর রহমান, কালীগঞ্জ উপজেলায় উপজেলা জামায়াত নেতা আজিজুর রহমান, কুড়িগ্রামের রৌমারীতে জামায়াতের উপজেলা আমির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, বাগেরহাটের রামপালে জেলা জামায়াতের যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, পিরোজপুরে ইন্দুরকানীতে দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মাসুদ সাঈদী এবং পঞ্চগড় সদরে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা মফিজ উদ্দিন চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবেন।

এ বিষয়ে জাবিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বিএনপির এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত—এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। দলের নীতিনির্ধারকরা পরবর্তী কোনো সিদ্ধান্ত নিলে জানিয়ে দেওয়া হবে।’

আর জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম বলেন, ‘জামায়াতের অনেক নেতা নিকট অতীতে উপজেলা ও পৌরসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবার জেলা ও উপজেলার নেতারা একমত হয়ে যদি নির্বাচন করতে চান, করবেন। কাউকে বাধ্য করা হবে না। এটি স্থানীয় দায়িত্বশীল নেতারা দেখবেন। এখানে কেন্দ্রীয় জামায়াত কোনো সিদ্ধান্ত দেবে না।’

আগামী মে মাস থেকে চার ধাপে সারা দেশে সাড়ে চার শতাধিক উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে প্রথম ধাপের ১৫২টি উপজেলা এবং দ্বিতীয় ধাপে ১৬১টি উপজেলায় ভোট গ্রহণের জন্য তপশিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ৫ মে প্রথম ধাপ ও ২১ মে দ্বিতীয় ধাপের ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।