সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কের দুই পাশে কয়েক শ শুকিয়ে যাওয়া গাছ রয়েছে। ঝড়-বৃষ্টি হলেই গাছের ডাল ভেঙে রাস্তার ওপর পড়ছে। এর ফলে সড়কে চলাচলকারী শিক্ষার্থী ও পথচারীরা আতঙ্কের মধ্য দিয়ে চলাচল করছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আগেই প্রশাসনের এসব গাছ কেটে সরিয়ে নেওয়া দরকার।
৮ এপ্রিল সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কের ব্রহ্মরাজপুর, রামচন্দ্রপুর, সাত্তারের মিল, ভালুকা চাঁদপুর, কোমরপুর, কুল্যার মোড়, বুধহাটা, বাঁকা সড়কের কাদাকাটি, শোভনালী, গোয়ালডাঙা ও বড়দল এলাকায় এসব শুকনা গাছ পড়েছে। এসব গাছে একটিও পাতা নেই, শুধু ডালপালা।
চাঁদপুর গ্রামের শিক্ষক আনারুল ইসলাম বলেন, এ পথ দিয়ে শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাওয়া-আসা করে। ঝড়-বৃষ্টি হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা আছে।
কুল্যার মোড় এলাকার গোলাম মোস্তফা জানান, তিনি ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালান। সড়কের দুই পাশে মরা গাছের কারণে তাঁদের দিনে ও রাতে ভয়ে ভয়ে যাতায়াত করতে হয়। সড়কের পাশের এ গাছগুলো কাটার জন্য স্থানীয়ভাবে বারবার জেলা পরিষদে আবেদন করা হয়েছে। তারপরও কেন এসব গাছ অপসারণ করা হচ্ছে না, তা কেউ জানে না।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাতক্ষীরা থেকে আশাশুনি ২৪ কিলোমিটারের এ সড়কের দুই পাশে ২০-২৫ বছর আগে শিশুগাছ রোপণ করে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ ও স্থানীয় লোকজন। কিন্তু দুই বছর আগে গাছগুলো শুকিয়ে যাওয়া শুরু করে। বর্তমানে গাছগুলো একেবারে শুকিয়ে গেছে। ঝড়–বৃষ্টিতে গাছের ডাল ভেঙে পড়ছে। পথচারীরা ছোটখাটো দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। গাছের ডাল ভেঙে পড়ায় ছয় মাস আগে সড়কের কোমরপুর এলাকায় সদর উপজেলার ফারুক হোসেন (৪০) মারাত্মকভাবে আহত হন। বর্তমানে তিনি ঠিকমতো চলাচল করতে পারেন না।
সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা সাধন কুমার বিশ্বাস জানান, শুধু সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কের গাছ নয়, অন্য সড়কের পাশে জেলা পরিষদের শুকিয়ে যাওয়া গাছ কাটার ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। মরা গাছ চিহ্নিত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি মাসের শেষের দিকে অথবা আগামী মাসের প্রথম দিকে দরপত্র দেওয়া সম্ভব হবে।
সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের প্রধান নাসরিন আক্তার মুঠোফোনে বলেন, সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কসহ বিভিন্ন সড়কের পাশে বড় বড় গাছ মরে গেছে। বিভিন্ন রোগ, মাটির উপাদান, আবহাওয়া কিংবা ভাইরাসের কারণে এসব গাছ মরে যেতে পারে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষণা ছাড়া তা সঠিকভাবে বলা যাবে না।