কক্সবাজার প্রতিনিধি ও চকরিয়া সংবাদদাতা
কক্সবাজারের চকরিয়ার হারবাং মধ্যম পহরচাঁদা এতিমখানার সরকারি অনুদানের ২ লাখ টাকা উঠাতে ৮০ হাজার টাকা ঘুষ প্রদানের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন ও অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, দাবিকৃত ঘুষের টাকা না দিলে অনুদান বাতিল করার হুমকিও দেয় সমাজসেবা অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। বাধ্য হয়ে এতিমখানার পরিচালক নগদ ৪০ হাজার টাকা মমতাজকে হস্তান্তর করেন। বাকি টাকা অনুদান পেলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। মূলত সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ভুক্তভোগী এতিমখানার পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, গেল বছর চকরিয়ায় ভিক্ষুকদের মধ্যে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হবে-এজন্য আমাদের কাছ থেকে অফিস খরচ হিসেবে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। কিন্তু আমি টাকা দিতে অস্বীকার করলে তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হন। অথচ এর কিছুদিন পূর্বেও আমার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে। একই বছর ডিসেম্বরের শেষের দিকে জুলাই হতে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে ১ লাখ ৯২ হাজার টাকার বিল দাখিল করলে আমাকে বিল দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন মমতাজ বেগম ও আমজাদ। বিল পেতে তাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করি। দেন দরবারে এক পর্যায়ে ৮০ হাজার টাকায় সমঝোতা হলে আমাকে চেক দেয়। সর্বশেষ চলতি বছরের ৮ এপ্রিল দুপুরে সমাজসেবা অফিস কক্ষে মমতাজ বেগমকে ৪০ হাজার টাকা বুঝিয়ে দিই। বাকি ৪০ হাজার টাকা দ্বিতীয় কিস্তির বিল উত্তোলনের পর দেবো বলে ম্যানেজ করি। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের কথা বলে আমাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতেন এ দুইজন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের ক্ষতির ভয়ে মুখ খুলে প্রতিবাদ করেননি কেউ। এছাড়া বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ও শিক্ষা উপবৃত্তি ভাতা বই নিতে গেলেও প্রতিজন উপকারভোগীর কাছ থেকে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা ঘুষ আদায় করতেন আমজাদ হোসেন ও মমতাজ বেগম।
অভিযুক্ত চকরিয়া উপজেলা সমাজসেবা অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মমতাজ বেগম তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করছে। টাকাগুলো আমার স্বামী বিদেশ থেকে পাঠিয়েছে। আমার বিরুদ্ধে কিছু বলতে গেলে আরও নিখুঁত প্রমাণ লাগবে।
অভিযুক্ত চকরিয়া উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আমজাদ হোসেন টাকা নেওয়ার বিষয়টি তিনি জানেন না বলে দাবি করেন। এ ব্যাপারে মমতাজ বেগমের সঙ্গে তার কোনো কথা হয়নি।
সমাজসেবা অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক হাসান মাসুদকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। পরে বক্তব্যের বিষয় জানতে চেয়ে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও উত্তর দেননি তিনি।