হেফাজত নেতা হাফেজ আব্দুল মাবুদকে নিয়ে গেল কারা?

হেফাজতে ইসলাম হাটহাজারী উপজেলার যুগ্ম সম্পাদক হাফেজ আব্দুল মাবুদকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য পরিচয় দিয়ে সাদা পোশাকধারীরা বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার গ্রামের বাড়ি উপজেলার মেখল ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের পজারী তালুকদার বাড়ি থেকে তাকে গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যায় বলে তার পরিবার অভিযোগ করেছে। হাফেজ আব্দুল মাবুদ ওই এলাকার মৃত আব্দুস সালামের ছেলে।

রোববার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ওই হেফাজত নেতার মা সাজেদা বেগম। তিনি জানান, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য পরিচয় দিয়ে সাদা পোশাকধারীরা বাসা থেকে তার ছেলেকে তুলে নিয়ে গেছে।

এ সময় ছেলেকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন— মায়ের এমন প্রশ্নের উত্তরে পোশাকধারীরা জানায়, আপনার ছেলের কাছে কিছু তথ্য আছে। তাই তাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে তাকে ফের বাসায় পৌঁছে দেওয়া হবে। তবে তার ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার ২০ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও সন্তানের সন্ধান পাননি বলে জানান আব্দুল মাবুদের মা।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হেফাজত নেতা আব্দুল মাবুদের চাচাতো ভাই মো. শাফায়েত বলেন, আমার জেঠাতো ভাই আব্দুল মাবুদ হাটাহাজারী বাসস্টেশন কলাবাগানস্থ ‘পাওয়ার নেট ইলেকট্রনিক্স’-এর স্বত্বাধিকারী। শনিবার রাত ১০টার দিকে আমি বাসায় আসি এবং এক ঘণ্টা পরে ১১টার দিকে বড় ভাই হেফাজত নেতা আব্দুল মাবুদ বাসায় আসেন। ঘণ্টাখানেক পর গোয়েন্দা সংস্থার পরিচয় দিয়ে কয়েকজন পুরুষ ও নারী সদস্য বাসায় প্রবেশ করে পরিবারের সদস্যদের একটি রুমে নিয়ে গিয়ে সবার মোবাইলগুলো নিয়ে নেয়।

তিনি আরও জানান, এরপর বড় ভাইয়ের রুমে গিয়ে আলমারি থেকে শুরু করে সব জায়গায় কি জানি খুঁজতে গিয়ে সবকিছু তছনছ করে ফেলে। একপর্যায়ে ভাইকে তারা ঘর থেকে বের করে গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়ার সময় কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে, তারা প্রথমে গোয়েন্দা সংস্থার কথা বললেও পরে হাটহাজারী থানায় নিয়ে যাচ্ছে বলে জানায়। এ সময় আমি তাদের সঙ্গে হাটহাজারী থানায় যেতে চাইলেও আমাকে বাধা দেওয়া হয়। তারা ভাইকে নিয়ে একটি নোহা গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়ার সময় তাদের পিছু নিয়ে দেখি তাদের গাড়ি চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়কের ইছাপুর বাজারের মরিয়ম ক্লাবের সামনে অবস্থান করছে। এরপর গাড়িটি কোন দিকে গেল তা আমি আর দেখতে পাইনি।

এদিকে হেফাজত নেতা আব্দুল মাবুদের পরিবারের সদস্যরা হাটহাজারী মডেল থানায় এ বিষয়ে জিডি করতে চাইলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ করেন তারা।

হাটহাজারী মডেল থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামানের মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোয়েব আহমেদ খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ত আছেন জানিয়ে ফোন কেটে দেন।

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা মীর ইদরিস জানান, দেশে এখন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নেই। এমন সময় আব্দুল মাবুদ গুম হাওয়ায় জনমনে আরেকটি নতুন নাটকের আতঙ্ক বিরাজ করছে। আমরা অনতিবিলম্বে এ হেফাজত নেতার মুক্তি ও সন্ধান চাই।

Check Also

আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি 

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।