ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে হামলার শিকার হয়েছেন পটুয়াখালী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) গোলাম মাওলা রনি।
এ ঘটনায় নিজের ফেসবুক ওয়ালে হামলার বর্ণনা দিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন রনি।
স্ট্যাটাসে সাবেক এই সংসদ সদস্য লেখেন, ‘জল্লাদের কবলে পড়ে আজ আর একটু হলেই মরতে বসেছিলাম। প্রাণের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আমার প্রাণের ওপর আঘাত আসবে এমন চিন্তা কোনো দিন মাথায় ঢোকেনি। তাই রাত বিরেতে একাকি, পায়ে হেঁটে, বা রিকশা বা উবারের মোটরসাইকেলে করে মনের আনন্দে দোয়েল চত্বর হয়ে কখনো টিএসসি বা কখনো শহিদ মিনার হয়ে নীলক্ষেত দিয়ে বাসায় ফিরেছি। অফিসে আসার ক্ষেত্রেও সর্বদা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস হয়েই আসতেই শান্তি অনুভব করি!
তো আমার সেই শান্তির যাত্রায় আজ কি ঘটেছে সেই কথা বলার চেষ্টা করব! আমার গাড়ি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেট্রোরেলের স্টেশন পাড়ি দিয়ে পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগের উল্টো দিক দিয়ে যাচ্ছিল ঠিক তখন ইউটার্ন নেওয়ার যায়গায় ৪-৫ জন যুবক হাতুড়ি এবং আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আমার গাড়ির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। হাতুড়ি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে গাড়ির গ্লাস ভেঙে ফেলল। হতচকিত ড্রাইভার প্রথমে গাড়ি ব্রেক করলেন। তারপর আবার দ্রুত টান মেরে জল্লাদদের কবল থেকে বাঁচার চেষ্টা করলেন। হাতুড়ি বাহিনী পেছনে ছুটল আর অকথ্য ভাষায় গালাগাল দিতে লাগল।
অফিসে এসে আমি বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানালাম। তারা বেশ আন্তরিকতা নিয়ে প্রতিকারের আশ্বাস দিলেন। আমি ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দামকেও ফোন করে ঘটনা জানালাম। তিনিও সান্ত্বনা দিলেন ।
উল্লিখিত আবস্থায় আমার কপালে আগামী দিনে কী ঘটবে তা আমি জানি না। এটা নিয়ে আমার কোনো উদ্বেগ বা উৎকণ্ঠাও নেই । কারণ আমি জন্ম থেকেই ছন্নছাড়া মানুষ। জীবনের প্রতি মায়া, বেঁচে থাকার স্বপ্ন বা কোনো কিছু পাওয়ার লোভ কোনো দিন আমাকে তাড়িত করেনি। সুতরাং মরে যাওয়া বা কেউ আমাকে মেরে ফেলবে এটা নিয়ে হৈ চৈ করার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না।
বর্তমানে আমার ব্যবসা বাণিজ্য প্রায় বন্ধ। চলমান দুর্বিষহ সময়, চারদিকে হাহাকার, অভাব অভিযোগ, মানুষের আর্তনাদ ইত্যাদি বিষয় আমাকে যেভাবে আহত করে, সেখানে কেউ যদি কষ্ট করে আমাকে মারতে আসে এবং মেরে ফেলে তাহলে অনেক ঝামেলা থেকেই বেঁচে যাই ।
সুতরাং আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার জন্য আজ আক্রমণ করে যারা ব্যর্থ হয়েছেন তাদের যেন আগামীতে কোনো কষ্ট করতে না হয় এই জন্য আমার সম্পর্কে কিছু তথ্য পেশ করলাম
আমার অফিস ৩৩ তোপখানা রোড। বাসা ১০ নায়েম রোড ধানমণ্ডি। বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত অফিসে থাকি। রোজ রাতে টকশো থাকে এবং গভীর রাতে একা একা বাসায় ফিরি। বিকালে রমনা পার্কে একা হাঁটি । শুক্রবার ধানমণ্ডি ৭ নম্বর সড়কের বাইতুল আমান মসজিদে নামাজ পড়ি। সুতরাং কেউ যদি আমাকে মেরে ফেলতে চান তাহলে একটু কষ্ট করে উল্লিখিত ঠিকানায় এলেই হবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেদায়েত দান করুন!’