ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবের পর সুন্দরবন থেকে আরও ১৫টি হরিণ ও একটি শুকরের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। বুধ ও বৃহস্পতিবার সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের কচিখালী এলাকা থেকে ভেসে আসা মৃত এই হরিণগুলো উদ্ধার হয়। পরে কটকা অভয়ারণ্য এলাকায় হরিণগুলোকে মাটি চাপা দেওয়া হয়। এছাড়া ভেসে আসা ১৭টি জীবিত হরিণ উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসে ৫৪টি হরিণ এবং দুইটি শুকরের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে উচ্চ জোয়ারের পানিতে দফায় দফায় সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। বিস্তীর্ণ অঞ্চলে পানি উঠে যাওয়ায় বনবিভাগ সুন্দরবনের বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর আশঙ্কা করে। ওই সময়ে বাগেরহাটের প্রধান প্রধান নদনদীগুলোতে বিপদ সীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয় বলে জানিয়েছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড।
খুলনা অঞ্চলের বনসংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো বলেন, সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের কচিখালী এলাকা থেকে ভেসে আসা আরও ১৫টি হরিণ ও একটি শুকরের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এই নিয়ে গত চারদিনে সুন্দরবনের ৫৪টি হরিণ এবং দুটি শুকর মিলিয়ে ৫৬টি বন্যপ্রাণীর মৃতদেহ পেয়েছি। এছাড়া ১৭টি জীবিত হরিণ উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত করা হয়েছে। উচ্চ জোয়ারের পানি সুন্দরবনে গহীনে উঠে যাওয়া হরিণগুলো ভেসে গিয়ে সাঁতরে কুলে উঠতে না পেরে মারা যেতে পারে বলে ধারণা করছি। ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবের দফায় দফায় উচ্চ জোয়ারে সুন্দরবনের সব নদীখাল উপচে বনের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে। এই জোয়ারের উচ্চতা ছিল দশ ফুটের উপরে। ওই পানি দেখে সুন্দরবনের বন্যপ্রাণীকুলের মৃত্যুর আশঙ্কা করছিলাম।
তিনি আরও বলেন, সুন্দরবনের পূর্ব ও পশ্চিম বিভাগে বনবিভাগের ফরেস্ট স্টেশন অফিস, ক্যাম্প ও ওয়াচ টাওয়ার অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বনের মধ্যে বনভিাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য যোগাযোগের মাধ্যম ওয়্যারলেস টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মিষ্টি পানির আধার পুকুর লোনা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। বনের অবকাঠামো বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়াসহ অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক পরিমাণ ৬ কোটি ২৭ লাখ টাকার উপরে।