ইসরাইলে মুখোমুখি সেনা ও সরকার, বিপাকে নেতানিয়াহু

হামাস নির্মূলের যে হুংকার নিয়ে গাজা উপত্যকায় হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। তা এখন দুঃস্বপ্নের মতো ফিরে আসছে। হামাসকে ধ্বংস করতে গিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে সেনাবাহিনী ও সরকারের মধ্যে। ফলে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের বিপদ বাড়ছে। বিপরীতে ইসরাইলি জনগণও দিনে দিনে আস্থা হারাচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছে নেতানিয়াহু।

সম্প্রতি ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্রের দেওয়া এক বক্তব্য ঘিরে বিভক্তির বিষয়টি আরও প্রকাশ্যে এসেছে।

গাজায় ৯ মাসে ৩৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেও ক্ষান্ত হয়নি ইসরাইল। হামাস নির্মূল না করা পর্যন্ত নেতানিয়াহু এই যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। তবে সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল দানিয়েল হাগারির দেওয়া বক্তব্যে বিপাকে নেতানিয়াহু। তার হামাস নির্মূলের লক্ষ্য অর্জন নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।

বুধবার দেশটির গণমাধ্যম চ্যানেল থার্টিন’কে হাগারি বলেছেন, হামাসকে নির্মূল করার কাজটি ‘অসম্ভব’ এবং এককথায় ‘ভুল’।

সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র বলেন, হামাসকে ধ্বংস করা, হামাসকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া; এককথায় জনগণের চোখে ধুলা দেওয়ার মতো বিষয়।

এই সেনা কর্মকর্তার দাবি, হামাস একটি আদর্শ। সেই সঙ্গে হামাস একটি দল। সংগঠনটি তাদের জনগণের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। কেউ যদি মনে করে আমরা হামাসকে নির্মূল করতে পারব, সেটা ভুল।

বিশ্লেষকরা বলছেন, হাগারির এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়েছে নেতানিয়াহুর সরকার। এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে চলমান যুদ্ধ নিয়ে নেতানিয়াহুর নেওয়া কৌশলের বিষয়ে একটি ধারণা পাওয়া যায়। আর মাঠে লড়াই চালিয়ে যাওয়া সেনাবাহিনী বলছে এই নীতি মূলত অবাস্তব।

হাগারির বক্তব্যের জবাবে নেতানিয়াহুর দপ্তর বলেছে, হামাসের সামরিক এবং সরকার পরিচালনার সক্ষমতা ধ্বংস করে দেওয়ার বিষয়টি যুদ্ধের লক্ষ্য হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা ঠিক করে দিয়েছে। অবশ্যই ইসরাইলের সামরিক বাহিনীও এর প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এরপরই নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে দেওয়া বিবৃতিতে সামরিক বাহিনী বলেছে, মন্ত্রিসভার ঠিক করে দেওয়া যুদ্ধের সব লক্ষ্য অর্জনে সামরিক বাহিনী অঙ্গীকারবদ্ধ। যুদ্ধে দিনরাত সেই কাজটিই করে চলেছে সামরিক বাহিনী এবং অব্যাহতভাবে সেটা করে যাবে।

হাগারির মন্তব্যের বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, তার বক্তব্য ছিল মতাদর্শ ও ধারণা হিসেবে হামাসকে ধ্বংস করা নিয়ে। তিনি খুবই স্পষ্টভাবে বিষয়টি বলেছেন। এ নিয়ে অন্য সব দাবি তার বক্তব্যের সাথে অপ্রাসঙ্গিকভাবে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে।

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।