ক্রাইম পেট্রোলে ক্রাইমসিন দেখে পাবনার ঈশ্বরদীতে তপু হোসেন নামে এক কিশোরকে হত্যা করা হয়। এরপর ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডের মতো লাশ গুমের পরিকল্পনা করে তার লাশ টুকরো টুকরো করে ট্রাংকের মধ্যে রেখে দেয় খুনিরা।
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা শহরের একটি ছাত্রাবাস থেকে তপু হোসেন (১৪) নামে এক কিশোরের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ৭ দিন ধরে এই কিশোর নিখোঁজ ছিল।
শনিবার সন্ধ্যায় ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের পেছনে মশুরিয়াপাড়ার অরণ্য ছাত্রাবাসের তিনতলার ৩০৫নং কক্ষে তপুর মরদেহের সন্ধান পাওয়া যায়। তার বাবার নাম আবুল কাশেম, পেশায় রিকশাচালক। সরকারি কলেজ এলাকায় তাদের বাড়ি।
এ ব্যাপারে নিহত তপুর বড় ভাই অপু জানান, চলতি মাসের ১৫ তারিখ সকাল ১১টার দিকে থেকে তপুর মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। ওইদিন রাত ১০টার দিকে তপুর ফোন নম্বর থেকে জানানো হয় আপনার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। বিকাশে ৩০ হাজার টাকা না দিলে তপুকে হত্যা করা হবে। তখন খরচসহ ৭ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এরপর থেকেই তপুর ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরদিন আমার মা বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় জিডি করেন। এরপর আজকে পুলিশ মরদেহের খোঁজ পান।
অপু আরও জানান, স্থানীয়দের সঙ্গে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বন্ধুদের দিয়ে বাড়ির পাশের অরণ্য ছাত্রাবাসের তিন তলার ওই কক্ষে নিয়ে হত্যা করে। এরপর মরদেহ টুকরো টুকরো করে ট্রাংকে ভরে রেখে হত্যাকারীরা পালিয়ে যায়।
অরণ্য ছাত্রাবাসের ৩০৪ নং কক্ষে থাকা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ৩য় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ বলেন, ঈদের ছুটিতে আমি গত ১১ জুন বাড়িতে চলে যাই। শনিবার দুপুরের দিকে ছাত্রাবাসের নিজ কক্ষে ফিরি। দরজার কাছে আসলে ভেতর থেকে দুর্গন্ধ বের হয়। পাশের ৩০৫নং কক্ষের ভেতর থেকে দরজা দিয়ে বের হওয়া রক্ত দেখতে পেয়ে আমি মেসের আয়ার মাধ্যমে মেস মালিককে জানাই। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে কক্ষের তালা খুলে ট্রাংকের ভেতরে রাখা মরদেহের টুকরো দেখতে পান।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, নিহত তপু একই এলাকার কয়েকজন উঠতি বয়সী মাদকাসক্ত ছেলেদের সঙ্গে চলাফেরা করতো। তারা সব সময় স্থানীয় হাসুর দোকানে বসে আড্ডা দিত। সম্প্রতি তপুও মাদক সেবন শুরু করেছিল। ঈদের আগে মাদক সেবনকে কেন্দ্র করেই হত্যার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
ঈশ্বরদী থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মনিরুল ইসলাম জানান, নিহত তপুর মা বাদী হয়ে থানায় গত ১৬ জুন একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। সেই সূত্র ধরে মশুড়িয়া পাড়ার একটি মেসে ট্রাংকের মধ্যে টুকরো টুকরো অবষ্থায় অর্ধগলিত মরদেহ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে সন্দেহজনক তিনজনকে আটক করা হয়েছে।