কওমী মাদ্রাসার ছাত্রদের জঙ্গিবাদের তকমা লাগানোর অপচেষ্টা চলছে: হেফাজত

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু ইসলাম বিদ্বেষী কর্মকর্তা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কওমী মাদ্রাসার ছাত্রদের টার্গেট করে জঙ্গিবাদের তকমা লাগানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সোমবার এক বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান এ অভিযোগ করেন।

   নেতৃদ্বয় বলেন, সরকারের সর্বোচ্চ দায়িত্বশীল মহল থেকে বারবার এরকম বক্তব্যের পরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু ইসলাম বিদ্বেষী কর্মকর্তা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কওমী মাদ্রাসার ছাত্রদের টার্গেট করে  জঙ্গিবাদের তকমা লাগানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। সাদা পোশাকে ধরে নিয়ে গিয়ে কয়েকদিন গুম রেখে পরে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত বলে কল্পিত অভিযোগ দিয়ে গ্রেপ্তারের নাটক সাজিয়ে দেশ-বিদেশে মাদ্রাসা ছাত্রদের সন্ত্রাসী হিসেবে প্রমাণ করতে এরা উঠেপড়ে লেগেছে। যা কওমী মাদ্রাসা ও আলেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে সুপরিকল্পিত চক্রান্ত। জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়ার দুজনসহ গ্রেপ্তারকৃত তিন ছাত্রকে কোন অপরাধে জঙ্গি বানানো হলো, তা জাতি জানতে চায়?

তারা বলেন, জঙ্গি ট্রাম্পকার্ড ব্যবহার করে পশ্চিমাদের আগের মতো বোকা বানানো যাবে না। মিথ্যা নাটকের কারণে নিষেধাজ্ঞা খেয়ে দেশের ভাবমর্যাদা আগেই ধুলায় লুটিয়ে দেয়া হয়েছে। তবুও এখন জঙ্গি নাটক করা হচ্ছে কওমি মাদ্রাসা ধ্বংস করার এজেন্ডা বাস্তবায়নের স্বার্থে। আমরা দেশে শান্তিতে থাকতে চাই, আলেম-ওলামা ও ছাত্রজনতাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে, গ্রেপ্তার ও হয়রানি করে সরকারের সঙ্গে সংঘাত তৈরি করবেন না। এসব অন্যায় কর্মতৎপরতা বন্ধ করা না হলে দেশের আপাময় জনতা কখনোই নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করবে না।

নেতৃদ্বয় বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি যে- গত বুধবার ঢাকার সাইনবোর্ড থেকে হাতের লেখা প্রশিক্ষণ শেষে বাড়ি যাওয়ার পথে কুমিল্লা থেকে জামিয়া পটিয়ার ছাত্র উজায়ের ও হামিমকে এবং লক্ষ্মীপুর থেকে নেয়ামতুল্লাহকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন। নিরীহ এই ছাত্রদের গ্রেপ্তারের তিন দিন পর তাদেরকে কক্সবাজারে জঙ্গি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

আমরা এর তীব্র  প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অনতিবিলম্বে তাদের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তাদেরকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।

তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ দায়িত্বশীল মহল থেকে একাধিকবার বলা হয়েছে যে, জঙ্গিবাদের সঙ্গে মাদ্রাসার শিক্ষার দূরতম সম্পর্কও নেই। একাদশ জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘কেউ কেউ বলবেন মাদ্রাসা হচ্ছে জঙ্গিবাদ সৃষ্টির কারখানা। কিন্তু আমরা এটার সঙ্গে একমত নই। হোলি আর্টিজানে জড়িতরা ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করা। উচ্চশিক্ষিত পরিবার ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া।

হেফাজত আমীর ও মহাসচিব প্রশাসনের উদ্দেশ্য বলেন, এসব জঙ্গি নাটক অবিলম্বে বন্ধ করুন। নিরীহ মাদ্রাসার ছাত্রদের টার্গেট করবেন না। দুর্বলের সঙ্গে জোর দেখিয়ে কাপুরুষতার পরিচয় দেবেন না। দেশের সাধারণ নিরীহ আলেম সমাজ ও মাদ্রাসা ছাত্র এবং সাধারণ নাগরিকদের ওপর জুলুম করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করবেন না।

Check Also

ঘোনা ইউনিয়নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন

আবুল হোসেন সদর প্রতিনিধি : ঘোনা ইউনিয়নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।