মধ্যরাতে ঢাবিতে কোটাবিরোধীদের বিক্ষোভ

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

রোববার রাত পৌনে ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সাড়া দিয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ছাত্রাবাস থেকে বেরিয়ে আসেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলসহ সব হলের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন। এছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও রাতে নিজ নিজ ক্যাম্পাসে মিছিল করে বলে জানা গেছে।

সরেজমিন দেখা যায়, রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হলপাড়াসংলগ্ন কবি জসীমউদ্দীন হল, বিজয় একাত্তর হল, মাস্টার দ্য সূর্য সেন হল, হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে থাকেন। পরে রোকেয়া হল, কবি সুফিয়া কামাল হলসহ প্রতিটি হল থেকে একই স্লোগান ভেসে আসে। পরে রাত পৌনে এগারোটার দিকে হলপাড়ার কয়েক হাজার শিক্ষার্থী একত্রিত হন। এ সময় তারা বিজয় একাত্তর হলে ঢুকতে চাইলে ছাত্রলীগের বাধার সম্মুখীন হন। কিন্তু বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে ঢুকে সমর্থকদের নিয়ে আসে। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ আহমেদ হামলার শিকার হন।

এরপর শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে ছাত্রদের বের করে মিছিল নিয়ে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আসেন। এ সময় মেয়েদের আবাসিক হলের অনেক শিক্ষার্থীও তাদের সঙ্গে যোগ দেন। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আসেন। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থান করে মিছিল নিয়ে টিএসসিতে জড়ো হন এবং সেখানে অবস্থান নেন তারা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’, ‘এই বাংলার মাটি, রাজাকারের ঘাঁটি’, ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’  ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

পরে রাত দেড়টার দিকে তারা অবস্থান কর্মসূচি শেষ করে হলে ফিরে যান। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রত্যাহারের দাবি জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারীরা।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, হলে আটকে রাখা শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে মিছিলে যুক্ত করা হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহসমন্বয়ক রিফাত রশিদ বলেন, বিজয় একাত্তর হলগেট বন্ধ রাখা হয়েছিল। সেখানে আটকে রাখা শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করতে গেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ ভাইয়ের ওপর হামলা চালানো হয়। আন্দোলনে অংশ নেওয়া আরেক শিক্ষার্থী বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষ বীর মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কোনো কোটা চায় না। দেশের মানুষ চায় মেধার মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ হোক।

এর আগে রোববার বিকালে চীন সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে প্রধানমন্ত্রী তার জবাব দিয়েছেন।

Check Also

ট্রাইব্যুনালে আ.লীগ নেতাদের বিচার দেখতে এসে যা বললেন সাঈদী পুত্র

জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক ৯ মন্ত্রীসহ ১৩ জনকে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।