পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ নামে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আবু সাঈদ বেরোবির ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আবু সাঈদের আহত হওয়ার পুরো দৃশ্য ধারণ করেছে একাধিক গণমাধ্যম। যমুনা টেলিভিশন এ ধরনের একটি ভিডিও প্রচার করেছে। এছাড়া স্থানীয়ভাবেও কেউ কেউ ভিডিও করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। এসব ভিডিও থেকে তার গুলিবিদ্ধ হওয়ার সময়ের পরিষ্কার একটি চিত্র পাওয়া যায়।
সংঘর্ষ শুরু হলে আন্দোলনকারীদের মধ্যে সবার আগে ছিলেন আবু সাঈদ। আবু সাঈদের ঠিক সামনেই অবস্থান করছিল পুলিশ। পুলিশের অবস্থানের জায়গাটি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে। গুলি করেছে পুলিশের সদস্যরাই। সেই গুলিতেই আহত হন তিনি।
ঠিক এভাবেই পুলিশের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন আবু সাঈদ।
উল্টো দিক থেকে রাবার বুলেট ছুড়ছিলেন পুলিশের সদস্যরা।
তারপরও অবস্থান থেকে সরেননি আবু সাঈদ, দাঁড়িয়েই ছিলেন, তার হাতে ছিল একটি লাঠি। তিনি সেই লাঠি দিয়ে রাবার বুলেট ঠেকানোর চেষ্টা করছিলেন।
ক্রমাগত রাবার বুলেটের মুখে একপর্যায়ে পিছু হটেন আবু সাঈদ, ফুটপাতে উঠে বসে পড়েন।
এ সময় আন্দোলনকারী একজন দৌড়ে আসেন এবং গুলি লেগেছে- এ রকম কথা শোনা যায়।
এরপর অন্যরা এসে তাকে ধরাধরি করে নিয়ে যান।
নিহত আবু সাঈদের বন্ধু অঞ্জন রায় বলেছেন, শরীরে একের পর এক রাবার বুলেটে ক্ষতবিক্ষত হওয়ার পর মাটিতে লুটিয়ে পড়েন আবু সাঈদ। তার নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল। এ সময় সংঘর্ষ চলছিল। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেরি হয়।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হৃদয় রঞ্জন রায় বলেন, মেডিকেলের সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তির আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। তবে তার শরীরের একাধিক স্থানে রাবার বুলেটের ক্ষত রয়েছে। নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল কিন্তু রাবার বুলেটের আঘাতে মারা গেছেন কিনা, তা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ছাড়া এ মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়।