সাতক্ষীরায় থানা ঘেরাওয়ের সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। আন্দোলনকারীদের আটক করার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে থানায় ঢোকার চেষ্টা করলে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় আন্দোলনকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিপেটা করে এবং কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ে। আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অন্তত ১৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের নারিকেলতলা এলাকায় বিক্ষোভ করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়কের খুলনা রোড মোড় অবরোধ করেন। সেখান থেকে লাবনী মোড় ও পরে সংগীতা মোড় এলাকায় বসে থেকে তাঁরা সাতক্ষীরা-কালীগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা আন্দোলনকারীদের আটকের খবর পেয়ে থানার দিকে যান।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, সাতক্ষীরা-কালীগঞ্জ সড়কে অবরোধ শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সদর থানার দিকে যান আন্দোলনকারীরা। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাঁরা থানায় ঢোকার চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। এ সময় ইটের আঘাতে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক মো. শাহানুল ও কনস্টেবল আদিম আহত হন। এর পরপরই পুলিশ লাঠিপেটা ও চার রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় পুলিশ সাতজনকে আটক করে। এর আগে শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে আরও আটজনকে আটক করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাতক্ষীরা জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতা বলেন, আজ সকাল ৯টা থেকে দূরদূরান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা নারিকেলতলা মোড়সহ শহরের বিভিন্ন স্থানে জড়ো হন। তাঁরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে নারকেলতলা মোড় থেকে মিছিল নিয়ে খুলনা রোড মোড়ে সমবেত হন। সেখানে তাঁরা সড়ক অবরোধ করে নানা স্লোগান দেন। পরে তাঁরা লাবনী মোড় ও সংগীতা মোড় এলাকায় অবরোধ করেন। সেখানে থাকতেই তাঁরা জানতে পারেন যে তাঁদের সহযোগী কয়েকজনকে পুলিশ বিভিন্ন স্থান থেকে আটক করেছে। এ জন্য তাঁরা থানা ঘেরাও করতে গিয়েছিলেন। পরে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে খুলনা রোড মোড়ে অবস্থান নেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে থানায় ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। তখন শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট মারলে দুজন আহত হন। একজনের অবস্থা গুরুতর। তাঁদের সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কতজনকে আটক করা হয়েছে জানতে চাইলে মহিদুল ইসলাম বলেন, তিনি ঘটনাস্থলে আছেন। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
তবে জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক জানান, গতকাল বুধবার রাত থেকে আজ বেলা একটা পর্যন্ত ২৫ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ।