ময়মনসিংহে কোটা সংস্কার আন্দোলনে জড়িত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর ওপর হামলা

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সক্রিয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের ওপর হামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে গৌরীপুর পৌরসভার নিমতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গতকাল রাতে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

আহত ছাত্রের নাম এনামুল হাসান (অনয়)। তিনি গৌরীপুর পৌর শহরের কালীপুর মধ্যতরফ (কলাবাগান) মহল্লার বাসিন্দা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত এই শিক্ষার্থী বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন। সেই সঙ্গে তিনি সংগঠনটির ঢাবি শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক। এর আগে গৌরীপুর উপজেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন।

হামলার পর পর গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন এনামুল। হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক শামীম আক্তার জানান, ওই ছাত্রের ডান হাতের কনুইয়ের নিচে একটি ও পিঠের ওপরে দুটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে কোনো সেলাই লাগেনি। প্রাথমিক চিকিৎসা পর তাঁকে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ হামলার ঘটনায় গতকাল রাত ১১টার দিকে গৌরীপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন এনামুলের মা। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন বলেন, ‘তাঁরা মামলা করতে চাননি। কারা হামলা করেছেন, তাঁদেরও চিনতে পারেননি। আমরা জিডি নিয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি কারা তাঁকে মারল।’

বাসায় ফেরার পথে এক ব্যক্তি পেছন থেকে ডাক দেন। শরীফ ভাই কথা বলবে জানিয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন জায়গায় যেতে বলেন। কিন্তু আমি যেতে চাইনি। কোটাসংস্কার আন্দোলনে আমি দেশবিরোধী বক্তব্য দিয়েছি, স্লোগান দিয়েছি—এমন অভিযোগ করে কয়েকজন আমাকে মারধর করেন।

আহত ছাত্র এনামুল হাসান

হামলার বিষয়ে এনামুল বলেন, ‘কারফিউ শুরুর হওয়ার দিন ঢাকা থেকে নিজ এলাকায় চলে আসি। বৃহস্পতিবার (গতকাল) সন্ধ্যার পর গৌরীপুরের বঙ্গবন্ধু চত্বর এলাকা থেকে বাসায় ফেরার পথে এক ব্যক্তি পেছন থেকে ডাক দেন। শরীফ ভাই কথা বলবে জানিয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন জায়গায় যেতে বলেন। কিন্তু আমি যেতে চাইনি। কোটাসংস্কার আন্দোলনে আমি দেশবিরোধী বক্তব্য দিয়েছি, স্লোগান দিয়েছি—এমন অভিযোগ করে কয়েকজন আমাকে মারধর করেন।’

এনামুল আরও বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে, যাঁরা হামলা করেছেন, তাঁরা ছাত্রলীগ ও আওয়ামী ঘরানার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তবে আমি কাউকে চিনতে পারিনি। ঢাকায় আন্দোলনে সক্রিয় ছিলাম এ কারণেই তাঁদের ক্ষোভ।’

উপজেলায় দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। শরীফ নামে ছাত্রলীগের কোনো কর্মী আছে বলে আমাদের জানা নেই। জামায়াত-বিএনপির লোকজন কাণ্ডটি ঘটিয়ে ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে থাকতে পারে।

গৌরীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ সাহা

এ হামলার সঙ্গে ছাত্রলীগ কিংবা আওয়ামী লীগের কেউ জড়িত নন বলে দাবি করেছেন গৌরীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোমনাথ সাহা। তিনি বলেন, ‘উপজেলাটিতে দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। শরীফ নামে ছাত্রলীগের কোনো কর্মী আছে বলে আমাদের জানা নেই। জামায়াত-বিএনপির লোকজন কাণ্ডটি ঘটিয়ে ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে থাকতে পারে।’

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।