বাংলাদেশে মানবিক সংকট চলছে : জাতিসঙ্ঘ

জনগণের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ এবং সাংবাদিকদের স্বাধীন ও নির্বিঘ্নে কাজ করার অধিকার রক্ষা করা উচিত বলে মন্তব্য করে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেছেন, বাংলাদেশে গুলি ব্যবহারের নিন্দা জানিয়েছে জাতিসঙ্ঘ।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সহিংসতার মধ্যেও বিষয়টি সবাইকে মনে করিয়ে দেয়া জরুরি, বাংলাদেশে মানবিক সংকট চলছে।

বুধবার (৩১ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসঙ্ঘ সদর দফতরে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে স্টিফেন ডুজারিক এ কথা বলেন।

এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, এই ব্রিফিংয়ে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের মুখপাত্র গাজায় সাংবাদিক নিহত হওয়ার বিষয়ে কথা বলেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে অন্তত তিনজন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। কেউ জানেন না, তারা কোথায়। তাদের একজন তার (প্রশ্নকারী সাংবাদিক) সাবেক সহকর্মী সাঈদ খান। তিনি কোথায় আছেন, তা কেউ জানেন না।

জবাবে স্টিফেন ডুজারিক বলেন, ‘বাংলাদেশে গুলি ব্যবহারের যে দৃশ্য আমরা দেখেছি, তার নিন্দা জানিয়েছি। বাংলাদেশ বা বিশ্বের যেকোনো দেশের সরকারের জনগণের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ এবং সাংবাদিকদের স্বাধীন ও নির্বিঘ্নে কাজ করার অধিকার রক্ষা করা উচিত।’

অপর প্রশ্ন ছিল, বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর দমন-পীড়ন অব্যাহত রয়েছে। এসব ঘটনা তদন্তে বাংলাদেশ সরকার কি জাতিসঙ্ঘের সহায়তা চেয়েছে? স্বাধীনতার অভাব থাকা রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানের তদন্তে জাতিসঙ্ঘ কি সহায়তা করবে? নাকি জাতিসঙ্ঘ নিজস্ব তদন্তের প্রস্তাব দেবে?

জবাবে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের মুখপাত্র বলেন, প্রশ্নে অনেকগুলো বিষয় রয়েছে। যেকোনো দেশের সরকার যেকোনো বিষয়ে সাহায্য চাইলে জাতিসঙ্ঘ অবশ্যই সব সময় তা করতে প্রস্তুত। আর কিভাবে সেই সহায়তা সবচেয়ে ভালোভাবে করা যায়, তা জাতিসঙ্ঘ দেখে। এ ধরনের বিষয়ে স্বাধীন তদন্ত করার জন্য জাতিসঙ্ঘের লেজিসলেটিভ বডির (আইনপ্রণয়নকারী পরিষদ) অনুমতি প্রয়োজন।

ব্রিফিংয়ের শুরুর দিকে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিবৃতি পড়ে শোনান স্টিফেন ডুজারিক। বিবৃতিতে বলা হয়, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সহিংসতার মধ্যেও বিষয়টি সবাইকে মনে করিয়ে দেয়া জরুরি, বাংলাদেশে মানবিক সংকট চলছে। ঘূর্ণিঝড় রেমালসহ বিভিন্ন জরুরি পরিস্থিতির শিকার মানুষদের জাতিসঙ্ঘ, জাতিসঙ্ঘের অংশীদারেরা অব্যাহতভাবে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। চলতি বছর ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ।

ইন্টারনেট ও ব্যাংক বন্ধ, কারফিউয়ের মতো অপারেশনাল চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও জাতিসঙ্ঘের অংশীদারেরা তাদের কাজ অব্যাহত রেখেছে। গত জুন মাসে জাতিসঙ্ঘ, জাতিসঙ্ঘের অংশীদারেরা ১২ লাখ মানুষকে সহায়তার জন্য ৮ কোটি ডলারের মানবিক সাড়া পরিকল্পনা চালু করেছে।

বিবৃতিতে ঘূর্ণিঝড়দুর্গত মানুষ এবং কক্সবাজারে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে মানবিক সহায়তার নানা তথ্য তুলে ধরে হয়।

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।