কুখরালী আহমাদীয়া দাখিল মাদ্রাসা ৭৬ লক্ষ টাকা নিয়োগ বাণিজ্যের ঘটনায় খোকনের দৌঁড়ঝপ

নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার কুখরালী আহমাদীয়া দাখিল মাদ্রাসায় সহ-সুপারসহ ৫ পদে নিয়োগের মাধ্যমে হাতিয়েছেন ৭৬ লক্ষ টাকা। এনিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার মাদ্রাসার সাবেক সভাতি মো. আসাদুজ্জামান খোকন বিভিন্ন মহলে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন। খোকনের দূর্ণীতির সংবাদ সংগ্রহের সময় সাংবাদিকদের কিছুক্ষণ অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন দূর্ণীতিবাজ খোকনের পরিবার।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও মাদ্রাসর শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানাযায়, সাবেক আওয়ামীলীগ নেতা মো. শহিদুল ইসলামের পুত্র আসাদুজ্জামান খোকন স্বজনপ্রীতি করে ৭৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন পদে ৫জনকে নিয়োগ দেন। এর মধ্যে ভাবি কোটায় নিয়োগ দেন তার ভাবিকে।
কুখরালী এলাকার বাসিন্দা মো. মোস্তফা গাজী বলেন, খোকন ও তার বাপের কথা বলতে গেলে লিখে শেষ করতে পারবেন না। জমি দখল, ঘের দখলসহ কাউন্সিলর থাকাকালীন পৌরসভার রাস্তাঘাট মেরামত ও তৈরী করার নাম করে পৌরসভা থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নয়ছয় করেছে শহিদুল তারই ধারাবাহিকতায় তার ছেলে খোকন তার বাপের উপরে উঠে গেছে।
তিনি আরও বলেন, খোকন সাবেক এমপিকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে ও এলাকার কিছু আওয়ামীলীগের পাতি নেতা ও কিশোর গ্যাং ব্যবহার করে সভাপতি পদ বাগিয়েছিলেন। মূলত সেই টাকা তোলার জন্য অবৈধভাবে রাতের আঁধারে ৫জন কে নিয়োগ দিয়েছেন। আবার সেই নিয়োগের টাকা দিয়ে বাড়ির সামনে কিছু জমিও কিনেছেন নিজের নামে।
মোস্তফা গাজী বলেন, খোকন মাদ্রাসার সভাপতি পদ ব্যবহার করে মাদ্রাসায় শিক্ষকদেরও হয়রানি করতেন। তার কথা মতো মাদ্রাসায় শিক্ষকরা না চললে দেওয়া হতো জীবন নাশের হুমকি। শুধু তাই নয় খোকন মাদ্রাসার পুরাতন বিল্ডিংয়ের ইটও বিক্রি করেছেন কোন প্রকার টেন্ডার ছাড়াই। আমরা দূর্ণীতিবাজ খোকনের উপযুক্ত শাস্তির মাধ্যমে পুনরায় স্বচ্ছতার মাধ্যমে ৫ পদে নিয়োগের দাবী জানাচ্ছি।
নিরাপত্তা কর্মী পদে মাদ্রাসায় চাকরী প্রত্যাশী মো. আমিনুর রহমান জানান, খোকন দূর্ণীতি করে কাউকে না জানিয়ে অবৈধ ভাবে নিয়োগ বোর্ড বসিয়ে কখন নিয়োগ হয়েছে আমরা চাকরী প্রার্থী অনেকেই জানি না। খোকন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে নিয়োগ করিয়েছেন। এঘটনায় দূর্ণীতিবাজ সাবেক সভাপতি মো. আসাদুজ্জামান খোকনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। সেই সাথে এই অবৈধ নিয়োগ বাতিল করে পূনরায় স্বচ্ছতার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়ার জোর দাবী জানাচ্ছি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক চাকুরী প্রার্থী বলেন, আমি মাদ্রাসায় চাকুরী প্রার্থী ছিলাম। আমার সাথে খোকনের কথা হয়েছিল ১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে আমাকে চাকুরী দিবে। কিন্তু অন্য প্রার্থীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাকে চাকুরি দিয়েছে।
এসব বিষয়ে মাদ্রাসার সুপার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, সভাপতি খোকনের বাসায় নিয়োগ বোর্ড বসেছিল। আর মাদ্রাসার নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্রাদি সাবেক সভাপতি খোকনের বাসায় আছে।
মাদ্রাসায় নিরাপাত্তার শঙ্কা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবারে সুপার বলেন, আমার মাদ্রাসায় কোন নিরাপত্তার শঙ্কা নেই। খোকন গায়ের জোর খাঁটিয়ে নিয়োগ সংক্রান্তসহ হিসাবের কাগজ তার বাসায় রেখেছে।
সুপার আরও বলেন, কিছু নিয়োগ রাতে বসছিলো, কিছু দিনেও বসছিলো। এবিষয়ে আমি এখন কিছু বলতে পারবো না আপনি পরে ফোন দেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে মাদ্রাসার সাবেক সভাপতি মো. আসাদুজ্জামান খোকন বলেন, আমি বাইরে আছি। মাদ্রাসায় বিষয়ে সবকিছু মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি কোন দূর্নীতির সাথে জড়িত নই।

Check Also

সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি সিন্ডিকেটের অন্যতম নেতা মনি ও তার সহযোগী গাজী ফরহাদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

সাতক্ষীরায় সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি সিন্ডিকেটের অন্যতম নেতা মনিরুল ইসলাম মনি ও তার সহযোগী গাজী ফরহাদের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।