মসজিদে যদি পাহারার প্রয়োজন না হয়, মন্দিরে হবে কেন: শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমার বাড়িতে যদি পাহারা না লাগে, আমার মসজিদে যদি পাহারার প্রয়োজন না হয়, তাহলে হিন্দু বন্ধুদের মন্দিরে পাহারার প্রয়োজন হবে কেন? আমরা এ ধরনের কোনো বৈষম্য চাই না। আমরা চাই আমাদের সন্তানরা যে বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে এর মাধ্যমে সব ধরনের বৈষম্যের কবর রচনা হোক। এমন একটি দেশ এমন একটি জগত আমরা আমাদের এখানে চাই যেই দেশে জাতি দল ধর্ম নির্বিশেষে দেশের সব মানুষ শান্তিতে বসবাস করবেন। এ দেশের নাগরিক হিসেবে দেশে এবং প্রবাসে যেখানেই থাকুক গর্বের সঙ্গে বলবে আমি বাংলাদেশি।

তিনি আরও বলেন, এখানে বিশেষ বিশেষ সময়ে কোনো ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উপাসনালয়, বাড়িঘর পাহারা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। কারণ যারাই জন্মগতভাবে এ দেশে জন্মগ্রহণ করবে তারা এ দেশের সৌভাগ্যবান নাগরিক।

সোমবার সকাল ১০টায় দিনাজপুর ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, বাংলাদেশ একটা বৈষম্যবিহীন দেশে পরিণত হোক। দুনিয়ার জাতিগুলো আমাদের নিয়ে যেন গর্ব করতে পারে এই রকম মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর জন্য একটা জাতি আমরা গঠন করতে চাই। এখানে যারা শহিদ হয়েছেন তাদের পরিবারের কাছে এসেছি ঋণ পরিশোধ করার জন্য। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। তাদের প্রত্যেকের বাড়িতে যাওয়া উচিত ছিল। ঘরে ঘরে গিয়ে তাদের সমবেদনা জানানোর দরকার ছিল। কিন্তু আমি ছোট একটা মানুষ, কিছু ব্যস্ততা রয়েছে, ঢাকায় বিশেষ কাজে আমাকে অংশগ্রহণ করতে হবে। এজন্য আমি সবার বাসায় যেতে পারলাম না। আমাকে মাফ করে দেন। যারা দয়া করে এখানে এসেছেন আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। এটা ভালোবাসার ফল। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি আল্লাহতায়ালা নিজেই যেন তাদের সবার পরিবারের একান্ত অভিভাবকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাদের সন্তান সন্ততি যারা আছেন তারা তাদের পরিবারের বীরের মর্যাদাকে বুকে ধারণ করে আগামীতে যেন তারা গর্ব করে বলতে পারে আমাদেরও একজন শহিদ আছে, আমাদের আগামী প্রজন্ম যেন বলতে পারে আমাদেরও আবু সাঈদ আছে, আমাদেরও রুদ্র আছে, আমাদেরও মুগ্ধ আছে আমাদেরও রিয়া আছে, কান্তা আছে। আমাদের এরকম হাজার হাজার শহিদ আছে। আমরা সেই বীরদের অনুসারী। তারা যেন অনুপ্রাণিত হয়। সত্যের পথে কল্যাণের পথে নিজেকে নিজে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দিনাজপুর উত্তর জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ আনিসুর রহমান। এতে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মমতাজউদ্দীন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, সাবেক জেলা আমির আফতাবউদ্দীন মোল্লা, দিনাজপুর দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির মো. আনোয়ারুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুল হাকিম, পঞ্চগড় জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা ইকবাল হোসেন, দিনাজপুর উত্তর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা রবিউল ইসলাম, কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ভুট্টু, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান পলাশ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ৭ জনের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করেন জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান।

এর আগে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান দিনাজপুর শহরের পাহাড়পুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ রুদ্র সেনের বাসায় গিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন।

Check Also

সাতক্ষীরা সীমান্ত থেকে ১০ বোতল ভারতীয় মদ জব্দ

মুহাম্মদ হাফিজ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা সীমান্তে মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ১০ বোতল ভারতীয় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।