ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় লন্ডনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক। ২০২০ সালে তাঁর প্রোস্টেট ক্যানসার ধরা পড়ে। সম্প্রতি শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে লন্ডনের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ পরিস্থিতিতে গতকাল শনিবার বাংলাদেশের একটি গণমাধ্যমে খবর বের হয়, এবি পার্টির প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে আবদুর রাজ্জাক পদত্যাগ করছেন। আজ রোববার লন্ডনের স্থানীয় সময় বেলা ১টার দিকের হোয়াটসঅ্যাপে তাঁর সঙ্গে এই প্রতিবেদকের বার্তা আদান-প্রদান হয়। এতে তিনি এবি পার্টি থেকে পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
লন্ডনে ব্যারিস্টার রাজ্জাকের ঘনিষ্ঠ সহচর ও এবি পার্টির যুগ্ম মহাসচিব সলিসিটর গোলাম আজম সাবেক এই রাজনীতিবিদের বর্তমান শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য দিয়েছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ব্যারিস্টার রাজ্জাকের শারীরিক অবস্থা ভালো না। আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) ছিলেন। এখন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। গতকাল মুখে কিছু খাবার খেয়েছেন। বর্তমানে তিনি রয়েল লন্ডন হাসপাতালে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে আছেন।
গোলাম আজম আরও জানান, চিকিৎসক তাঁকে (ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক) কথা বলতে নিষেধ করেছেন। তাঁর ওজন কমে এখন ৫৩ কেজিতে নেমে এসেছে। তিনি অসুস্থ রাজ্জাকের জন্য সবার দোয়া চেয়েছেন।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল। তিনি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসামিপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি হিসেবেও কাজ করেছিলেন। ২০১৯ সালে তিনি জামায়াত থেকে পদত্যাগ করেন। পরে আত্মপ্রকাশ করা এবি পার্টির প্রধান উপদেষ্টা হয়েছিলেন তিনি।
এই রাজনীতিবিদ ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যে আসেন। এরপর তিনি আর দেশে ফিরে যাননি।
জানা গেছে, সত্তরের দশকের শেষের দিকে লেখাপড়ার জন্য যুক্তরাজ্যে এসেছিলেন আবদুর রাজ্জাক। ১৯৮০ সালে তিনি ব্যারিস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত তিনি লন্ডনেই আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৮৫ সালের ডিসেম্বরে দেশে ফিরে আইন পেশা শুরু করেন। ২০১৩ সালে যুক্তরাজ্যে ফিরে আবার পুরোদমে আইন পেশায় ব্যস্ত হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
ব্যারিস্টার রাজ্জাকের দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। দুই ছেলেও ব্যারিস্টার। পূর্ব লন্ডনের একটি বাড়িতে তিনি স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের শেখলাল গ্রামে।