সাতক্ষীরা সিটি কলেজের অধ্যক্ষের চেয়ার দখল


স্টাফ রিপোটার: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা উপেক্ষা করে সাতক্ষীরা সিটি কলেজের অধ্যক্ষের চেয়ার দখল করে আলোচনায় এসেছেন মনিরুজ্জামান মনি। একজন জুনিয়র শিক্ষক হয়ে সিনিয়র শিক্ষকদের মাড়িয়ে কৌশলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের চেয়ার দখল করায় কলেজের শিক্ষকদের মধ্যে চলছে নানা গুঞ্জন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সুযোগ কাজে লাগিয়ে সুবিধাবাদীরা যাতে কোন অনিয়ম করতে না পারে সে বিষয়ে নজর দেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা।
জানা গেছে, সাতক্ষীরার তৎকালীন আলোচিত আমান উল্লাহ হত্যা মামলার ১৮নং চার্জশীট ভুক্ত আসামী মনিরুজ্জামান। একসময় বিএনপির অনুসারী হলেও ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে রাতারাতি ভোল পাল্টিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাদের আর্শীবাদ পুষ্ট হয়ে যান মনিরুজ্জামান। জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদের শেল্টারে তৎকালীন সিটি কলেজের বিএনপি জামায়াত অনুসারী শিক্ষকদের কোনঠাসা করে সাবেক অধ্যক্ষ ইমদাদ কে মনিরুজ্জামানের পেটুয়া বাহিনী দিয়ে লাঞ্ছিত করে কলেজ থেকে তাড়িয়ে দিয়ে আবু আহমেদ কে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের চেয়ারে বসান।
কলেজের গণিতের শিক্ষক প্রভাষ চন্দ্র বৈরাগী হত্যা মামলায় মনিরুজ্জামান ১ নং আসামী হলেও আওয়ামী লীগের নেতাদের প্রভাব খাটিয়ে আলোচিত এ হত্যা মামলাটিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেন।
সম্প্রতি সিটি কলেজের বৈধ অধ্যক্ষ ড. শিহাব উদ্দীন কে কলেজ থেকে বের করে দেয় মনিরুজ্জামানের পেটুয়া বাহিনী। অধ্যক্ষ ড. শিহাব উদ্দীন জীবনের ভয়ে কলেজে না আসায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করে কলেজের উপাধাক্ষ্য আলতাফ হোসেন। কিন্তু আলতাফ হোসেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হলে মনিরুজ্জামানের পেটুয়া বাহিনী বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। একপর্যায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলতাফ হোসেন কে হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে অপাগরতা প্রকাশ করিয়ে ফিল্মি স্টাইলে অধ্যক্ষের চেয়ার দখল করে নেন মনিরুজ্জামান।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী কলেজের অধ্যক্ষের পদ শূণ্য হলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করবেন উপাধ্যক্ষ। যদি তিনি অপারগ হন তাহলে জ্যোষ্ঠতার ভিত্তিতে একজন সিনিয়র শিক্ষক দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু মনিরুজ্জামান সে তালিকায় ১৩ নাম্বার সিরিয়ালে থাকলেও অবৈধভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ দখল করে নেন। বিগত ফ্যাস্টিট আমলে যেভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দখল করা হতো সেই পদ্ধতি কাজে লাগিয়েই মনিরুজ্জামান বাগিয়ে নিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ। এতে সাতক্ষীরার শিক্ষক সমাজের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক শিক্ষক বলছেন, চোর তাড়িয়ে যেন ডাকাত আনা হয়েছে। অবিলম্বে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সাতক্ষীরা সিটি কলেজে যোগ্য ব্যক্তিকে অধ্যক্ষের পদে বসানোর দাবি তাদের।
এদিকে, ফ্যাস্টিট সরকারের পতনের পর মনিরুজ্জামান জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের সকল নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে অবৈধভাবে একটি এডহক কমিটির অনুমোদন করিয়ে আনেন। ওই এডহক কমিটির সভাপতি করা হয়েছে মনিরুজ্জামানের চাচা অধ্যাপক নওশাদ আলম এবং আরেক চাচা আক্তারুল ইসলাম কে করা হয়েছে বিদে্যুাৎসাহী সদস্য। পরবর্তীতে ওই অবৈধ কমিটিই তাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের চেয়ারে বসার সুযোগ করে দিয়েছেন বলে কলেজের একটি বিশেষ সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
এবিষয়ে অধ্যক্ষ শিহাবের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, উক্ত কমিটি আমার দেওয়া না এবং উক্ত কমিটি বিধি বহিূর্ভতভাবে করা হয়েছে। আমি উক্ত কমিটি বাতিল পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া অবৈধভাবে আমাকে কলেজ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষক মনিরুজ্জামানের ব্যবহৃত নাম্বারে একাধিকার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ না করায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তবে এডহক কমিটির সভাপতির সাথে যোগাযোগ করে কিভাবে সভাপতি হয়েছেন এবং আপনাকে সভাপতি করার জন্য প্রস্তাবনা কে পাঠিয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন কমিটির বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। ##

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।