ফিলিস্তিনের গাজার স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের রাজনৈতিক শাখার ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন খালেদ মেশাল। শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা তাস লেবাননের একটি সূত্রে এ খবর জানিয়েছে। গোষ্ঠীটির প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে এ সিদ্ধান্ত এলো।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সিনওয়ারকে হত্যার দাবি করে ইসরায়েল। এখনো হামাস এ ব্যাপারে কোনো বিবৃতি দেয়নি। ইসরায়েলের দাবি অস্বীকারও করেনি। কিন্তু গোষ্ঠীটির প্রধান হিসেবে অলিখিতভাবে খালেদ মেশালের নেতৃত্ব মেনে নিয়েছে।
লেবাননের এলবিসিআই নিউজের বরাত দিয়ে তাস জানিয়েছে, হামাসের পলিটিক্যাল ব্যুরোর চেয়ারম্যান ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যা করা হয়েছে। এরপর গোষ্ঠীটির বৈদেশিক প্রধান খালেদ মেশাল ফিলিস্তিনি সংগঠনটির হাল ধরেছেন।
সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে, মেশাল ভারপ্রাপ্ত প্রধানের ভূমিকা নিয়েছেন এবং এখন ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনায় তিনি নেতৃত্ব দেবেন। এ ছাড়া হামাসের মিত্রদের সঙ্গে যোগাযোগও তিনি করবেন।
গাজার যোদ্ধাদের নতুন প্রধান নিহত
সূত্রগুলো আরও জানিয়েছে, হামাস নতুন নেতৃত্বের বিষয়টি তুরস্ক, কাতার ও মিসরীয় কর্মকর্তাদের জানিয়েছে। তাদের কাছে তেল আল-সুলতানে ইসরায়েলি এক অভিযানে সিনওয়ারের মৃত্যুর কথাও স্বীকার করেছে। এও জানিয়েছে, সিনওয়ারের মৃত্যুতে বন্দিদের বিনিময় এবং যুদ্ধ শেষ করার বিষয়ে আলোচনা ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠবে।
ইসমাইল হানিয়াহ নিহতের পর তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন সিনওয়ার। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামলার পরিকল্পনাকারী ছিলেন ইয়াহিয়া সিনওয়ার; আইডিএফ এমনটিই বিশ্বাস করে। এর প্রমাণ হিসেবে তাদের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। বলা হয়, তিনিই ছিলেন সেই হামলার মাস্টারমাইন্ড।
দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের খবরে বলা হয়, বুধবার এক সম্মুখ যুদ্ধে তারা গাজায় তিন সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে। তার মধ্যে একজন হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মতো দেখতে। কিন্তু তখন তারা আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দিয়ে মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত হতে ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহ করে ইসরায়েলে পাঠায়। সেই পরীক্ষার ফলাফল হাতে এলে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয় আইডিএফ।
আইডিএফ এক বিবৃতিতে বলেছে, গাজার একটি ভবনের নিচতলায় বুধবার একদল হামাস যোদ্ধাদের ওপর গুলি চালায় ইসরায়েলি সেনারা। এ সময় সম্মুখ গোলাগুলি শুরু হয়। এতে হামাস যোদ্ধারা টিকতে পারেনি। কেউ কেউ পালিয়ে যায়। অপরদিকে একের পর এক গোলায় ভবনটির এক পাশ ধসে পড়ে। পরিস্থিতি যখন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে তখন ভবনে প্রবেশ করে ইসরায়েলি সেনারা অবাক হয়ে যান। তারা অন্যদের সঙ্গে সিনওয়ারের মরদেহ উদ্ধার করেন।
ইসরায়েলের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আইডিএফ সৈন্যরা সিনওয়ারকে টার্গেট করে হামলা করেনি। তিনি যে ভবনটিতে থাকতে পারেন তা জানা ছিল না। ঘটনাটি আকস্মিক।